নয়াদিল্লি: পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)কেলেঙ্কারির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে তাঁর বক্তব্য জানতে চাইলেন রাহুল গাঁধী। কেন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী নীরব, প্রশ্ন করেন তিনি। কংগ্রেস সভাপতি শনিবার বলেন, ২২০০০ কোটি টাকার এই কেলেঙ্কারি সর্বোচ্চ মহলের সায় ছাড়া কিছুতেই হওয়া সম্ভব ছিল না। সরকারের ঘরের লোকজনের সব জানা ছিল। কেন কেলেঙ্কারি হয়েছে, তিনি এবার কী করবেন প্রকাশ্যে বলুন প্রধানমন্ত্রী। রাহুল কটাক্ষ করেন, প্রধানমন্ত্রী দেড় ঘন্টা ধরে পডু়য়াদের বলতে পারেন, কী করে পরীক্ষা দিতে হয়, কিন্তু এই কেলেঙ্কারিতে কে দায়ী, জবাব দিতে পারেন না।


বিজেপি পিএনবি জালিয়াতিতে অভিযুক্ত শিল্পপতি নীরব মোদীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে বলে যে অভিযোগ তুলেছে, তা খারিজ করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, এসব ওদের মূল প্রশ্ন থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা।

পিএনবি জালিয়াতির ব্যাপারে বিজেপিকে দায়ী করল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকার দেশের অর্থনীতিকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শীর্ষ কংগ্রেস নেতা কপিল সিবল। মোদীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার চোখে ভারতের ভাবমূর্তির ক্ষতি হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। কটাক্ষ করে বলেন, উনি দেশের পাহারাদার হয়ে ঘুমোচ্ছিলেন, সেই সুযোগে চোরেরা দেশের সম্পদ নিয়ে ভেগেছে।
এই মামলায় সিবিআইয়ের দায়ের করা দ্বিতীয় এফআইআর উদ্ধৃত করে সিবল বলেন, এনডিএ সরকারের আমলেই ২০১৭ সালে অভিযুক্তদের দেওয়া লেটারস অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই সরকার দুর্নীতি ঠেকাতে পারেনি।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের কমিউনিকেশনস ইনচার্জ রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা, শক্তিসিন গোহিল, পবন ভেরাকে সঙ্গে নিয়ে সিবল প্রশ্ন করেন, কেন মোদী তাঁর বিদেশ সফরের সঙ্গী হওয়া লোকজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে চাইছেন না। প্রধানমন্ত্রী মোদী যে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস-এর কথা বলে থাকেন, এটা কি তাই? তারপরই তিনি বলেন, বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করছি, ওরা ইউপিএ আমলের শাসন ওর ওদের নিজেদের সরকার চালানোর ব্যাপারে বলুক। ওদের উদ্দেশ্যই অসাধু, যার ফলে ভারতের অর্থনীতিকে ধসিয়ে দিয়েছে ওরা।
প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দপ্তর কোটি কোটি টাকার ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ব্যাপারে সব জেনেশুনেও সেদিক থেকে নজর ঘুরিয়ে রেখেছিল বলে অভিযোগ করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিবল। বলেন, ওরা জানত যে, দেশের অর্থ লুঠ হয়ে যাচ্ছে।
কেন এ ব্যাপারে সরকারে হয়ে আসরে নামানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী ও সামাজিক ন্যয়মন্ত্রীকে, প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সিবলের অভিযোগ, হিরে ও গয়নার ব্যবসায় নথিভুক্ত কোম্পানিগুলির মোট বাজার মূলধনের পরিমান প্রায় ৪১.৬৬ বিলিয়ন টাকা, আর মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ৯৪ বিলিয়ন টাকা। এর অর্থ ঋণের পরিমাণই মোট বাজার মূলধনের দ্বিগুণ। সেটাই কি বড় কেলেঙ্কারি নয়? কে বলবে এটা যে, এসব সরকার জানতই না!