নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে নওয়াজ শরিফের সরে যাওয়ার ফলে পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধি হবে। একইসঙ্গে তাদের ছত্রছায়ায় বাড়বে সন্ত্রাসবাদও। অবনতি হবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের। এমনটাই আশঙ্কা করছে ভারতের বিশেষজ্ঞরা।
১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাই-কমিশনার জি পার্থসারথী বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং স্থিতিহীনতার ফলে পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর লাভ হয়েছে। তিনি মনে করেন, পাক সামরিক বাহিনীর ছত্রছায়ায় গজিয়ে ওঠা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি নতুন উদ্যমে ভারতে হামলা চালানোর চেষ্টা করবে।
একই আশঙ্কার কথা শোনা গেল ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাই-কমিশনার মীরা শঙ্করের গলাতেও। বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি পাবে। ১৯৯৯-২০০০ সালে বিদেশসচিব পদে থাকা ললিত মানসিংহ বলেন, সেনা এখন আরও লাগামছাড়া হবে। ফলে, ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতার হার বৃদ্ধি পেতে পারে।
তিনি যোগ করেন, ডোকালামে চিনের সঙ্গে ভারতের সংঘাতের ফলে, পাকিস্তান এদেশের বিরুদ্ধে সীমান্তপার সন্ত্রাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন, আবার সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে, পাকিস্তান আরও বড় আকারে ভারতের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপ শুরু করতে পারে।
একইসঙ্গে, দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি নিয়েও প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে কূটনীতিক বিশেষজ্ঞদের গলায়। তাঁদের মতে, শরিফের ইস্তফার পরে এখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন তলানিতে ঠেকতে পারে। কারণ, পাক সামরিক বাহিনী এই সম্পর্কের পরিপন্থী।
পার্থসারথির মতে, নওয়াজ শরিফ যতদিন ছিলেন, অন্তত এই আশা ছিল যে তিনি সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে চেষ্টা করবেন। কিন্তু, এখন সামরিক বাহিনী নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমনও হতে পারে, চিনা সেনাকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে পূর্ণ ক্ষমতা দিতে পারে ইসলামাবাদ প্রশাসন। যা ভারতের চিন্তার বিষয়।
মীরা শঙ্করের মতে, শরিফ জমানাতেও পাক সেনা সব সিদ্ধান্ত নিত। তাঁর দাবি, সুকৌশলে, দুর্নীতির অভিযোগ এনে শরিফকে সরিয়ে দেওয়া হল। তিনি যোগ করেন, এখন শেহবাজ শরিফকে কার্যত ‘কাঠের পুতুল’ করে যাবতীয় রাশ নিজেদের হাতে নেবে পাক সামরিক বাহিনী।