নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ গ্রহণ করার পর কংগ্রেসের অনেক নেতাই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু গতকাল আরএসএসের মঞ্চে প্রণবের ভাষণ শোনার পর কংগ্রেস নেতারা তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আরএসএস-কে ভারতের বহুত্ববাদের পাঠ শেখানোর প্রণবের ভাবমূর্তি নয়া উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের নেতারা।
গতকাল নাগপুরে আরএসএসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রণব সতর্ক করে বলেন যে,গোঁড়ামি, ধর্ম, আঞ্চলিকতা, ঘৃণা বা অসহিষ্ণুতার দ্বারা আমাদের জাতীয়তাকে ব্যাখ্যা করার যে কোনও চেষ্টা জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ত্বকেই গুলিয়ে দেবে। জনজীবনকে যে কোনও রকম হিংসা থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছেন, কংগ্রেসের মতাদর্শ সঠিকভাবে আরএসএসের কাছে তুলে ধরেছেন প্রণব। এভাবেই তিনি আরএসএসের মতাদর্শের গলদটা দেখিয়ে দিয়েছেন।
কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, এক্ষেত্রে আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে নয়, বক্তব্য দিয়েই বিচার করতে হবে। প্রণবের ভাষণে এই বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে।
সিংভি ট্যুইট মারফত বলেছেন, প্রথম দিন থেকেই বলেছিলাম, আমন্ত্রণ বা আমন্ত্রণকারীর পরিচয় দিয়ে কাউকে বিচার করলে হবে না। বিচার করতে হবে ওই অনুষ্ঠানে কী বললেন তা দিয়ে। শেষপর্যন্ত আমার এই কথাই প্রমাণিত হল। প্রণবদা ভাষণে তাঁর মতামত তুলে ধরেছেন। প্রথম কোনও প্রাক্তন কংগ্রেসি হিসেবে তিনি আরএসএস-কে কিছু শিক্ষা দিলেন।
সিংভি বলেছেন, প্রণবদাকে আমন্ত্রণ করাটা তখনই ভালো হবে যদি আরএসএস তাঁর ভাষণ থেকে কিছু শিক্ষা নেয়।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা আশাপ্রকাশ করেছেন যে, আরএসএস প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বার্তা গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, গতকাল নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতরে প্রণবকে টেলিভিশনে দেখার পরই শর্মা বলেছিলেন যে, এই ছবি ভারতে বহুত্ববাদে বিশ্বাসী মানুষকে কষ্ট দেবে।
কিন্তু গতকাল প্রণবের ভাষণের পর সুর বদলে শর্মা বলেছেন, নাগপুরে প্রণবদা তাঁর ভাবমূর্তিকে নয়া উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। গর্বিত করেছেন। আপনার চারিত্রিক দৃঢ়তা, নৈতিক সাহস, ধর্মনিরপেক্ষ সাংবিধানিক গণতন্ত্র সম্পর্কে আপনার দায়বদ্ধতা নিয়ে আমার মনে কখনও কোনও সন্দেহ ছিল না। আপনি আরএসএস-কে ভারতের বহুত্ববাদের বৈচিত্র ও সম্বৃদ্ধির বিষয়টি আরএসএস-কে জানিয়েছেন। তারা আপনার ওই বার্তা গ্রহণ করবে এবং এর প্রতিফলন ঘটাবে বলে আশা করছি।