পুখরায়ান ও নয়াদিল্লি: কানপুরের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার নেপথ্যে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে, তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানালেন রেলমন্ত্রী। এদিনই এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করল রেল কর্তৃপক্ষ।


সোমবার উত্তর-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অমিত মিশ্র জানান, রেল নিরাপত্তা কমিশনার (পূর্বাঞ্চল) পি কে আচার্য দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুমড়ে-চুমড়ে যাওয়া কোচ এবং ক্ষতিগ্রস্ত রেল ট্র্যাক ভাল করে পরীক্ষা করেন। গোটা প্রক্রিয়াটির ভিডিও তোলা হয়। পাশাপাশি, রেল ইঞ্জিনিয়ার এবং অন্যান্য স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিনি।


ইতিমধ্যেই, দুর্ঘটনার নেপথ্যে ট্রেনচালকের গাফিলতির একটা অভিযোগ উঠেছে। এক যাত্রীর দাবি, চলন্ত কামরায় বিকট শব্দ হওয়ার অভিযোগ করলেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি।


সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, ইনদওর-পটনা এক্সপ্রেস ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উজ্জ্বয়িনীতে প্রকাশ শর্মা নামে এক যাত্রী রেলের এক আধিকারিককে ট্রেনের চাকায় বিকট শব্দ হচ্ছে বলে জানান।


কিন্তু তাঁর কথায় গুরুত্বই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। দুর্ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এস-২ কামরার যাত্রী ছিলেন প্রকাশ। কিন্তু দুর্ঘটনার আগেই তিনি নেমে যান।


এই প্রসঙ্গে মিশ্র জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীরা চাইলেও তাঁরা কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করে দুর্ঘটনার আগে বা তার পরের ঘটনার বিবরণ জানাতে পারেন। সেই কথা শোনার জন্য আগামী ২ দিন কানপুর স্টেশনে থাকবেন আচার্য।


রবিবার ভোর সওয়া তিনটে নাগাদ ইনদওর থেকে পটনা যাওয়ার পথে কানপুরের কাছে মালসার ও পুখরায়ান স্টেশনের মাঝে লাইনচ্যুত পটনা-ইনদওর এক্সপ্রেসের ১৪ টি বগি।


দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে এস-১, এস-২ ও এস-৩ কামরার। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৬। মৃতদের মধ্যে ৬৮ জন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা, ২৮ জন মধ্যপ্রদেশের, ৩১ জন বিহারের, ২ জন মহারাষ্ট্র এবং একজন ঝাড়খণ্ডের। আহত দুশোরও বেশি।


এদিকে, এদিনই লোকসভায় দাঁড়িয়ে রেলমন্ত্রী ঘোষণা করেন, দুর্ঘটনার পিছনে কারও গাফলতি প্রমাণিত হলে, তাকে কঠোর সাজা দেওয়া হবে। প্রভু জানান, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার জন্য তিনি রেল সেফটি কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং ফরেন্সিকের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।


 কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সোমবারই ভোগনিপুর পুলিশ স্টেশনে অজ্ঞাত রেল কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে জিআরপি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩৭, ৩৩৮, ৩০৪এ এবং রেল আইনের ১৫৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।