দাভোস: রক্ষণমুখী, ঘরোয়া স্বার্থমুখী অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে চলছে কিছু দেশ, দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের মঞ্চে বললেন নরেন্দ্র মোদী। এর বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। দু দশকে প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সেখানে ভাষণ দিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ভারতকে বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো জায়গায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন এদিন, পাশাপাশি গোটা পৃথিবীকে নানা ফাটল, বিভাজন থেকে মুক্ত করতে বিশ্বনেতাদের একসঙ্গে হাত মেলানোর আবেদনও করেন।
তিনি বলেন, আমাদের সামনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে যেগুলির উত্তর আগামী প্রজন্মগুলিকে দিতে হবে। চলতি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় কি বিশ্বে বিভাজন, ব্যবধান তৈরি হচ্ছে? আমরা কি সেগুলি সরিয়ে ফেলে দূরত্ব ঘুচিয়ে দিতে পারি যাতে সকলে এক সুন্দর ভবিষ্যত্ ভাগ করে নেওয়া যায়?
মোদী বলেন, অনেক দেশের মধ্যেই অন্তর্মুখী হওয়ার রাস্তা নিয়েছে, ফলে বিশ্বায়ন সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। এই প্রবণতা সন্ত্রাসবাদ বা জলবায়ু বদলের বিপদের চেয়ে কম ক্ষতিকর নয়। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে যেভাবে আমেরিকা ফার্স্ট নীতির মতো নানা পদক্ষেপ করছেন, সেদিকেই ইঙ্গিত করলেন প্রধানমন্ত্রী।
এবারের সম্মেলনের প্রতি ইঙ্গিত করে মোদী বলেন, ভারতীয়রা সবসময় মানুষকে যুক্ত করায় বিশ্বাসী, বিভাজনে নয়, তাই তাঁর কাছে এর বিরাট গুরুত্ব। আমরা সবসময় বসুধৈব কুটুম্বকম মানে পুরো পৃথিবী একই পরিবার, এই ধারনায় বিশ্বাস করি। সমস্যা হল, সমস্যা সমাধানে ঐকমত্য হয় না। পরিবারেও মতভেদ থাকে, তবে যখনই সবার সামনেই বিপদ খাড়া হয়, একসঙ্গে হাত মিলিয়ে তার মোকাবিলার মনোভাব গড়ে ওঠে।
মোদী বলেন, আজকের পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত বিশ্বে বিশ্বায়ন তার মহিমা হারাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তৈরি বিশ্ব সংগঠনগুলি কি আজ মানবতার স্বপ্ন, প্রত্যাশার প্রতিফলন করতে পারছে? উন্নয়নশীল দেশগুলির সাপেক্ষে একটি বিরাট ফারাক রয়েছে।
ভারতকে বিনিয়োগের বড় গন্তব্যস্থল হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার সংস্কার, কাজ করে দেখানো ও বদলের নীতিতে চলছে। আমরা ভারতে বিনিয়োগ, নির্মাণ ও কাজ করা আরও সহজ করে তুলেছি। লাইসেন্স, পারমিট রাজ উঠে গিয়েছে। লাল ফিতের ফাঁসের জায়গায় এসেছে লাল কার্পেট। ১৪০০টি এমন আইন তুলে দেওয়া হয়েছে যেগুলি দেশের বৃদ্ধির সামনে বাধা হয়ে উঠেছিল। জিএসটি চালু হয়েছে।