শ্রীনগর: ফের ছাত্র বিক্ষোভে তোলপাড় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি। প্রতিষ্ঠানের গেট অবধি মিছিল করে বাইরের পড়ুয়ারা। শ্রীনগরের ডাল লেকের পাশে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অন্যত্র সরানো সহ একাধিক দাবিতে ক্যাম্পাসের ভিতরেই মিছিল করে বাইরের পড়ুয়ারা।

এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে পড়ুয়ারা মিছিল করে প্রতিষ্ঠানের গেটের কাছে এলে সেখানেই তাঁদের আটকে দেয় নিরাপত্তারক্ষী। স্লোগান দিতে থাকে পড়ুয়ারা। গেটের বাইরে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলতে চায় তাঁরা।

বাইরের ওই পড়ুয়াদের দাবি, ওই কর্মকর্তাদের বদলি করতে হবে। এনআইটি ক্যাম্পাস সরিয়ে জম্মুতে নিয়ে যেতে হবে। পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্যাম্পাসের ভিতরে মন্দির তৈরি করতে হবে। তাদের প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানের মূল দরজায় জাতীয় পতাকা তোলার অনুমতি দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘দেশবিরোধী’ কার্যকলাপের অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা।

ইতিমধ্যেই ১ ও ৫ এপ্রিল হিংসার ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। টি-২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের জেরে কলেজ ক্যাম্পাসে স্থানীয় পড়ুয়াদের সঙ্গে বাইরে থেকে পড়তে যাওয়া ছাত্রদের মধ্য বিবাদ তৈরি হয়। ভারতের পরাজয়ে উল্লাস প্রকাশ করে স্থানীয় ছেলেরা বাজি ফাটালে বাইরে থেকে যাওয়া পড়ুয়ারা প্রতিবাদ জানায়। দু তরফের বিবাদ, সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে সীমা সুরক্ষা বলের জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়। স্থানীয় পুলিশও নামে।

জম্মু ও কাশ্মীরের ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিংহ জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় বাইরের ও স্থানীয় পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক এফআইআরও দায়ের করেছে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে বিভিন্ন ভিডিও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।

ক্যাম্পাসের ভিতর বন্দুকধারী পুলিশি পাহাড়ারও নিন্দা করেছে বাইরের পড়ুয়ারা। তাদের বক্তব্য, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন তাঁরা। তাঁরা বাড়ি ফিরে যেতে চায়। পুলিশ তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ ওই পড়ুয়াদের।

এদিকে পড়ুয়াদের দাবি, তাঁদের সঠিক মূল্যায়ণ হচ্ছে না। পরীক্ষার খাতা ‘নিরপেক্ষতা’র স্বার্থে কাশ্মীরের বাইরের রাজ্যের পরীক্ষকদের দিয়ে দেখানোরও দাবি তোলেন তাঁরা।

এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী ১১-১৪ এপ্রিলের মধ্যে যে সব কম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা রয়েছে, সেগুলিতে চাইলে না-ও বসতে পারে পড়ুয়ারা। যাঁরা বাড়ি ফিরে যেতে চাইছে, তাঁদের জন্য পরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।