মুম্বই: ফাঁসির সাজা প্রদানে বিলম্ব, ধর্ষণ ও হত্যায় দোষী সাব্যস্ত অপরাধীদের শাস্তি কমিয়ে ৩৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট। আগামী ২৪ জুন ২০০৭ সালের বিপিও ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই অপরাধী পুরুষোত্তম বোরাতে এবং প্রদীপ কোকাড়ের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে তার ৭২ ঘণ্টা আগে ২১ জুন আদালত জানায়, এই  মামলায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের ফাঁসি দেওয়া যাবে না। বিচারপতি বি পি ধর্মাধিকারি এবং স্বপন জোশীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অপরাধীরা তাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা রধের জন্য আবেদন করেছে। আদালত তাদের সাজা লঘু করেছে।


অপরাধীদের আইনজীবী যুগ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “রায়ে আদালত জানিয়েছে, দুই জনকেই ৩৫ বছর কারাগারে বন্দি থাকতে হবে।”


২০০৭ সালের ১ নভেম্বরের ঘটনা। বিপিও কর্মী প্রতিদিনের মতোই কাজ সেরে অফিসের ক্যাবে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ক্যাব চালক বোরাতে ও তার বন্ধু কোকাড়ে নির্যাতিতাকে জোর করে দূরবর্তী একটি এলাকায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। তারপর বিপিও কর্মীর  ব্যবহৃত ওড়না দিয়েই তাঁকে শ্বাসরোধকে খুন করে। বর্বরতা এমনই চরমে পৌঁছায়, ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে দুই অপরাধী নির্যাতিতার মুখও বিকৃত করে দেয়।


এই ঘটনায় ২০১২ সালে নিন্ম আদালত অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে। অপরাধীরা নিন্ম আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করলেও সাজা অপরিবর্তিতই থাকে। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির কাছে  জীবন ভিক্ষার আর্জি জানায় দুই অপরাধীই। তাও নাকচ হয়ে যায়। এরপর চলতি বছরের ১০ এপ্রিল নিন্ম আদালত দোষীদের ফাঁসির সাজা কার্যকর করার জন্য ২৪ জুন দিনটি ধার্য্য করে। ইতিমধ্যেই দোষীরা আদালতে আবেদন করে জানায়, “বিগত চার বছর (১ হাজার ৫০৯ দিন) মাত্রাতিরিক্ত ও ব্যাখ্যাহীন বিলম্বের   কারণে আমরা মানসিক পীড়নের মধ্যে দিয়ে জীবন অতিবাহিত করছি। এমন মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া জীবনের অধিকারের পরিপন্থী।” এই হলফনামার পর আদালত ‘সাজা কার্যকরে মাত্রাতিরক্ত বিলম্বের কারণ’ দর্শিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ডের সাঘা লঘু করে যাবজ্জীবনের রায় শোনায়। রাজ্যের তরফে দোষীদের আবেদন খারিজ করার আবেদন করা হলেও আদালত তা মানেনি।