শ্রীনগর: জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসআইএস-এ যোগ দিতে ইচ্ছুক পুণের তরুণী সাদিয়া আনোয়ার শেখকে গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ গ্রেফতার করলেও, তাঁর বিরুদ্ধে ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও সাদিয়া মৌলবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন এবং সিরিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু কাশ্মীর বা মহারাষ্ট্রে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। সেই কারণে এই তরুণীর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। সাদিয়াকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।


পুলিশ সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার পক্ষ থেকে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশকে জানানো হয়, পুণের এক মহিলাকে বেশ কয়েকবার আটক করেছিল এটিএস। সেই মহিলা এখন উপত্যকায় আছেন। তাঁর উপর নজর রাখতে হবে। এই খবর পেয়ে সাদিয়ার নাম উল্লেখ করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল মুনির খান সব জেলার পুলিশকে পাঠানো নির্দেশিকায় বলেন, কাশ্মীরে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে ঢুকে বা কাছাকাছি কোথাও আত্মাঘাতী বিস্ফোরণ ঘটাতে পারেন কাশ্মীরের বাইরের ১৮ বছর বয়সি এক তরুণী। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য আছে। তাই নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং প্যারেডে যাওয়া সব মহিলার তল্লাশি করতে হবে। এই নির্দেশিকা পাওয়ার পরেই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে পুলিশ। সন্দেহের বশে সাদিয়াকে আটক করা হয়।

জেরায় জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে ১৮ বছর পূর্ণ করা এই তরুণী কিছুদিন ধরে কাশ্মীরের বিজবেহারা অঞ্চলে পেইং গেস্ট হিসেবে থাকছিলেন। মৌলবাদে আকৃষ্ট হওয়া সাদিয়া সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলিতে উপত্যকার সাধারণ মানুষের উপর নিরাপত্তারক্ষীদের অত্যাচারের মিথ্যা প্রচার করছিলেন। তবে তিনি সরাসরি কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত নন।

সাদিয়া যে আত্মঘাতী জঙ্গি নন, সেই ভুল বুঝতে পেরে মুনির বলেছেন, ‘আমরা ওই তরুণী ও সহযোগী সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলছি। আসল ঘটনা জানার জন্য সব তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপযুক্ত তদন্ত করার পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।’

সাদিয়ার বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর মা দাবি করেছেন, ‘আমার মেয়ে নির্দোষ। কেউ হয়তো ওর নামের অপব্যবহার করেছে। তিন দিন আগেই সাদিয়ার সঙ্গে আমার কথা হয়। ও বলেছিল ভাল আছে।’ সাদিয়া কেন কাশ্মীরে গিয়ে থাকছিলেন, সে বিষয়ে অবশ্য কোনও জবাব দেননি তাঁর মা।