নয়াদিল্লি:  মহাভারতের যুগে ইন্টারনেট, অভিনেত্রী ডায়না হেডেনকে তাঁর মুখের গড়ন এবং গায়ের রঙ নিয়ে খোঁটা দেওয়া। তারপর মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার নয়, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদেরই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়া উচিত। তরুণ প্রজন্মকে পরামর্শ, সরকারি চাকরির জন্যে সময় নষ্ট না করে, পানের দোকান বা দুই দুইয়ে পয়সা রোজগারের ভাবনাচিন্তা করা। এহেন নানা মন্তব্যে তিনি মাঝেমধ্যেই ঝড় তোলেন, তবে সমালোচনার পরও যে তিনি একইরকম ভাবে নির্লিপ্ত তা আরও একবার প্রমাণিত। তাঁর অদ্ভূত মন্তব্যের সর্বশেষ সংযোজন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'নোবেল পুরস্কার' ত্যাগ করেছিলেন।


 

এবছর মার্চে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই এমনই কিছু অদ্ভূত মন্তব্য অবলীলায় করে যাচ্ছেন বিপ্লব দেব। সেই নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার মুখেও থামেনি তাঁর এমন মন্তব্যের বাণ। মোদী তাঁর মন্ত্রীদের আলটপকা মুখ না খোলার নির্দেশ দিলেও, তার তেমন কোনও প্রভাব যে বিপ্লব দেবের ওপর এখনও পড়েনি, সেকথা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।

দুদিন আগেই ছিল বিশ্বকবির ১৫৭ তম জন্ম জয়ন্তী। সেই উপলক্ষে ত্রিপুরার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন বিপ্লব দেব। সেখানেই তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ।  ইতিহাসের ভিত্তিতে তথ্যগত ভাবে বিপ্লব দেব একটু গুলিয়ে ফেলেছেন। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালা বাগ কাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বিশেষজ্ঞদের দাবি, 'নাইট উপাধি'র সঙ্গে কোনওভাবে 'নোবেল পুরস্কারে'র বিষয়টি হয়তো গুলিয়ে ফেলেছেন বিপ্লব দেব। সেইজন্যেই এমন মন্তব্য!

ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড ক্লেমসফোর্ডকে একটি চিঠি লিখে, ঘটনার প্রতিবাদ করে নাইট উপাধি ফিরিয়ে দেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

তবে বিভিন্ন ধরণের অদ্ভূত মন্তব্য করেও যেমন আগেও নির্লিপ্ত ছিলেন ত্রিপুরার নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী, এবারও এখনও পর্যন্ত তাঁর করা ঐতিহাসিকভাবে এই ভুল মন্তব্য শুধরে নেওয়ার বিষয় কোনও হেলদোল নেই বিপ্লব দেবের।