নয়াদিল্লি:  দলিতদের ওপর জাতপাতের ইস্যুতে সাম্প্রতিককালের বিভিন্ন হামলা, সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রতিবাদে সোমবাররাজঘাটে রাহুল গাঁধীর অনশনকে 'প্রহসন' বললেন বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র।

কংগ্রেস সভাপতির এই কর্মসূচির মঞ্চে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ১৯৮৪ সালের ইন্দিরা গাঁধী হত্যাকাণ্ড পরবর্তী শিখ-বিরোধী হিংসায় অভিযুক্ত দুই কংগ্রেসি নেতা সজ্জন কুমার ও জগদীশ টাইটলার। যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয় পাছে তাঁদের উপস্থিতি দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়, এই ভয়ে।

সম্বিত বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বের ওই দুজনকে রাজঘাটের মঞ্চ থেকে বাধ্য হয়ে চলে যেতে বলা থেকেই স্পষ্ট, ওরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নিল! মহাত্মা গাঁধীর সমাধিস্থলে কংগ্রেস নেতারা শান্তি, অহিংসার কথা বলতে জড়ো হলেন, কিন্তু সেখানে কুমার, টাইটলারের হাজির থাকায় ওই দলের 'আসল হিংস্র' মুখটা বেরিয়ে এল! নিজেদের পাতা ফাঁদেই পা দিল কংগ্রেস। আজ রাহুল গাঁধী যা করলেন, সেটা অনশন নয়, প্রহসন। মানুষ তাঁকে বারবার প্রত্যাখ্যান করা সত্ত্বেও কংগ্রেস দ্রুত তাঁর রাজনীতিতে চাকচিক্য আনতে চাইছে।

রাহুল দলিত ইস্যুতে মোদী সরকারকে নিশানা করায় পাল্টা বিজেপি তাঁকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে, কংগ্রেসের শাসনে মির্চপুর, গোহানা, ঝাঝরে যখন দলিত-বিরোধী হিংসা ঘটেছিল, সে সময় রাহুল কি একবেলাও উপবাস করেছিলেন?
ভোটমুখী কর্নাটকে ৫ বছরের কংগ্রেস শাসনে দলিত-বিরোধী হিংসার পরিসংখ্যান পেশ করে সম্বিত দাবি করেন, দলিতদের বিরুদ্ধে ৯০৮০টি অপরাধ হয়েছে, ৩৫৮ জনের বেশি দলিত মারা গিয়েছেন। ওখানকার দলিতদের জন্য কবে রাহুল অনশনে বসবেন, জানান।

আরেক বিজেপি মুখপাত্র বিজয় সোনকার শাস্ত্রী কংগ্র্রেসের বিরুদ্ধে দলিত আইকন বি আর অম্বেডকরের প্রতি দুর্ব্যবহারের অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অম্বেডকরের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে দিনরাত এক করে খাটছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রথম লোকসভা ভোটে অম্বেডকরের জামানত যাতে বাজেয়াপ্ত হয়, সেজন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি। সোনকারের অভিমত, দলিতরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বিশ্বাসী, কিন্তু কংগ্রেসই হিংসা ছড়িয়েছে। দলিতরা ক্রমশ বিজেপির দিকে ঘেঁসতে থাকায় কংগ্রেস ধাক্কা খেয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

দুজনেই নেহরু মন্ত্রিসভা থেকে অম্বেডকরের ইস্তফা চিঠি উদ্ধৃত করে দাবি করেন, দলিত নেতা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী কেবলমাত্র মুসলিমদের কথা ভাবেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনিও মুসলিম স্বার্থরক্ষায় সমান আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু নেহরু সরকার দলিত ও আদিবাসীদের রক্ষায় তেমন কিছু করেনি।