নয়াদিল্লি: লকডাউন পর্বে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার ঢল অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য সরকারগুলির কাছ থেকে রেলের কাছে আরও ৩২১ টি ট্রেন চালানোর অনুরোধ করা হয়েছে। আর পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনের পরিষেবা বন্ধের ব্যাপারে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রেল। এমনটাই খবর সূত্রের।
রেল অবশ্য জানিয়েছে, যতদিন চাহিদা থাকবে ততদিন এই ট্রেন চালানো হবে। এরইমধ্যে গত ২৯ মে রাজ্যগুলির কাছে চিঠি দিয়ে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান তাদের কাছে ফিরে যেতে আগ্রহী নথিভূক্ত পরিযায়ীদের তালিকা খতিয়ে দেখে এ ধরনের ট্রেনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ৩০ মে-র মধ্যে জানাতে অনুরোধ করেছিলেন। বিভিন্ন রাজ্যের প্রয়োজন অনুসারে এই ট্রেন পরিষেবার পরিকল্পনা তৈরির জন্যই এই চিঠি দিয়েছিলেন তিনি।


সূত্রের খবর, ৩০ মে সন্ধে পর্যন্ত এ ধরনের ৩২১ টি ট্রেনের চাহিদা রেলের কাছে এসেছে।
৩১ মে পর্যন্ত রেল এ ধরনের চার হাজার ট্রেন চালিয়েছে। এই ট্রেনগুলিতে করে ঘরে ফিরেছেন প্রায় ৫৬ লক্ষ পরিযায়ী। রাজ্যগুলির কাছ থেকে এই ট্রেনগুলির চাহিদা কমেছে।
যে ৩২১ ট্রেন চালানোর আর্জি এসেছে, সেগুলির বেশিরভাগেরই গন্তব্য পশ্চিমবঙ্গ।
দিনে গড়ে ২০০ শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালানোর সক্ষমতা রয়েছে রেলের। এই হিসেবে ৩২১ ট্রেনের চাহিদা দুদিনের মধ্যেই পূরণ করা যাবে বলে খবর সূত্রের। তবে এই ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রাখতে হয়।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রবিবার এ ধরনের ৬৯ ট্রেন চালানো হয়েছিল।
এ ধরনের ৪২.২ শতাংশ ট্রেন গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে, বিহারে ৩৬.৫ শতাংশ, ঝাড়খণ্ডে ৪.৮ শতাংশ, ওড়িশায় ৩.২ শতাংশ, পশ্চিমবঙ্গ ২.৩ শতাংশ ও বাকি অন্যান্য রাজ্যে গিয়েছে।
লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে মূলত রাজ্য সরকারগুলির অনুরোধে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হচ্ছে। এই ট্রেনগুলির খরচের ৮৫ শতাংশ রেল ও ১৫ শতাংশ বহন করছে রাজ্যগুলি।

দেশজুড়ে লকডাউন শুধুমাত্র অর্থনীতিই নয়, লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছে। গত দুমাস ধরে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুঃখদুর্দশার ছবি সামনে উঠে এসেছে। রোজগার ও আশ্রয় হারিয়ে অনেকে হেঁটেই ঘরের উদ্দেশে রওনা দেন। পথ দুর্ঘটনাতেও অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
ঘরে ফেরার পথে ক্লান্ত হয়ে রেললাইনের ওপর ঘুমিয়ে পড়ার পর ট্রেনের ধাক্কায় পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রাণ হারানোর ঘটনাও ঘটেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ১ মে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো শুরু করে রেল।