নয়াদিল্লি: সংসদের বর্যাকালীন অধিবেশনের শুরুতেই কাশ্মীর প্রসঙ্গ নিয়ে উত্তাপ ছড়াল রাজ্যসভায়। কাশ্মীরের চলতি অশান্তির  রাজনৈতিক সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধীরা কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদল বৈঠক ডাকারও দাবি জানিয়েছে।   বিতর্কের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ  ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তানের উস্কানিকেই দায়ী করেছেন। রাজনাথ বলেছেন, পাকিস্তান  দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করছে।  তিনি আরও বলেছেন, কাশ্মীরীরা এদেশেরই মানুষ। তাঁদের ভুলপথে চালিত করা হচ্ছে। রাজনাথ বলেছেন, নিজেদের মুসলিমদের ত্রাতা দাবি করা পাকিস্তানের উচিত নয়। তিনি দেশের সংখ্যালঘুদের  আশ্বস্ত করে  তাঁদের কাছে  সরকারের প্রতি আস্থা রাখা ও ভুলপথে চালিত না হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, কাশ্মীরে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে চূড়ান্ত সংযম বজায় রাখতে বলা হয়েছে। রাজনাথ বলেছেন, কাশ্মীর সম্পর্কে সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই মতামত গ্রহণ করবে সরকার।
এর আগে রাজ্যসভায় কাশ্মীর সম্পর্কে স্বল্পমেয়াদের বিতর্কে অংশগ্রহণ করে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ সাফ জানিয়ে দেন, জঙ্গি কার্যকলাপ দমনে কেন্দ্র ও জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের পাশেই রয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু সেখানে নারী ও শিশু সহ সাধারন মানুষের ওপর যে  ''যথেচ্ছ বলপ্রয়োগ'' করা হচ্ছে, তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
কাশ্মীরে চলতি অশান্তির জন্য রাজ্যে পিডিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপির সরকার গঠন, বিজেপি  ও আরএসএস নেতাদের একাংশের প্ররোচনামূলক মন্তব্য এবং সর্বোপরি পাকিস্তানের ভূমিকা সহ একাধিক কারণের উল্লেখ করেন আজাদ। কংগ্রেস নেতার দাবি, পাকিস্তানের ভূমিকাই কাশ্মীরের সমস্ত সমস্যার মূল কারণ। একইসঙ্গে তিনি বলেন, বন্দুকের নল বা বুলেট দিয়ে কাশ্মীরকে শাসন করা যাবে না। কাশ্মীরের চলতি পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠকের দাবিও জানান তিনি।
কাশ্মীরের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে স্বীকার করেও   পিডিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপির সরকার গঠনকে উপত্যকায় হিংসা ছড়ানোর কারণ বলে আজাদ যে দাবি করেছেন তা খারিজ করে দিয়েছেন জেটলি।
উপত্যকায় দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর জন্য  সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে জেটলি বলেন, এই সময় সমস্ত দেশের একসুরে কথা বলা উচিত। একইসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে দুর্ভোগের মুখে না পড়েন তা নিশ্চিত করতে হবে।
হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর কাশ্মীরে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। জেটলি তরুণদের বিক্ষোভ-আন্দোলন থেকে দূরে থাকার আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কয়েক হাজার মানুষ পুলিশকে আক্রমণ করতে তার পাল্টা ব্যবস্থা তো নেওয়া হবেই। তিনি বলেন, দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংগ্রাম চলছে। সাধারণ মানুষ জাতীয় স্বার্থে দেশের পাশেই রয়েছেন।
জেটলি বলেছেন, পাকিস্তান কখনওই জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ বলে মানতে পারেনি। এজন্য তারা কাশ্মীরকে অস্থির করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এটাই কাশ্মীরে হিংসার একমাত্র কারণ। পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদকে মদত দিয়ে চলেছে।
জেটলি বলেছেন, যুদ্ধে ভারতকে হারানো যাবে না বুঝতে পেরে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে।