নয়াদিল্লি:  সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে নোট বাতিল ইস্যুতে এমপিদের কড়া কড়া প্রশ্নের মুখে পড়লেন উর্জিত পটেল। কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এম বীরাপ্পা মইলির নেতৃত্বাধীন কমিটির কংগ্রেস সদস্যরা চেপে ধরেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে। কবে নোট বাতিলের পর তৈরি হওয়া অচলাবস্থা কেটে গিয়ে দেশে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে, তিনি সে ব্যাপারে স্পষ্ট সময়সীমা দিতে পারেননি বলে সূত্রের খবর।

দিগ্বিজয় সিংহের মতো বেশ কয়েকজন কংগ্রেস সাংসদ দাবি  করেন,  নগদ টাকা তোলার ওপর বিধিনিষেধ কবে পুরোপুরি উঠে যাবে, স্পষ্ট করে জানাতে হবে উর্জিতকে।  তাঁরা আরও জানতে  চান, বড় অঙ্কের নোট বাতিল করে বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি কার? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসন নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তাঁকে। কিন্তু তিনি তাঁদের বেশিরভাগ প্রশ্নেরই সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন এমপি। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৯.২ লক্ষ  কোটি টাকা বা বাতিল হওয়া ১০০০, ৫০০ নোটের ৬০ শতাংশ নতুন নোটের আকারে বাজারে ফিরে এসেছে। কিন্তু নোট বাতিল হওয়ার পর ৫০ দিনে কত ৫০০ -১০০০ টাকার নোট জমা পড়েছে,  সে ব্যাপারে স্পষ্ট তথ্য তিনি দিতে পারেননি বলে অভিযোগ।

এদিন দুই ডেপুটি গভর্নর আর গাঁধী ও এস এস মুন্দ্রাকে নিয়ে কমিটির বৈঠকে আসেন উর্জিত। ২০ জানুয়ারি সংসদের পিএসি-তেও তাঁর যাওয়ার কথা নোট বাতিল ইস্যুতে। এদিন উর্জিত কমিটির সামনে বলেন, নোট বাতিলের ব্যাপারে ২০১৬-র গোড়া থেকেই সরকারের সঙ্গে কথা চলছিল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের। ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিলের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সরকারের সঙ্গে তাঁরা সহমত বলেও জানান তিনি। তবে সদস্যরা জানতে চান, কেন কালো টাকা, জাল নোট, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার কথা গোড়ায় বলেও শেষে ডিজিটাল লেনদেনের কথা বলা হল।

বৈঠকের পর এক সাংসদ বলেন, গভর্নর তাঁদের  প্রশ্নের আংশিক জবাব দিয়েছেন।  কিন্তু মূল প্রশ্নের জবাব মেলেনি। ঠিক কত টাকা অর্থ ব্যবস্থায় ফিরে এসেছে, ব্যাঙ্কগুলিতে স্বাভাবিক অবস্থা কবে ফিরবে, প্রশ্ন করা হলে স্পষ্ট কিছু বলেননি তিনি। মনে হয়, আরবিআই কর্তারা নোট বাতিল নিয়ে চাপে রয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, পটেলকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হওয়া থেকে কার্যত উদ্ধার করেন মনমোহন সিংহ। তাঁকে আরও প্রশ্নে জেরবার করা থেকে সাংসদদের বিরত করেন তিনিই। নোট বাতিল ইস্যুকে রাজ্যসভায় তিনিই সরকারের পাহাড়প্রমাণ ব্যর্থতা ও সংগঠিত লুঠ বলেছিলেন। এদিন তিনিই সাংসদদের বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে আরবিআইকে যথাযথ গুরুত্ব, মর্যাদা দিতে হবে। তার গভর্নরের সম্মানও অক্ষুন্ন রাখতে হবে। তাঁকে প্রশ্নের মাধ্যমে আক্রমণ না করাই সমীচিন হবে।