নয়াদিল্লি: নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত তড়িঘড়ি নেওয়া হয়নি। বিস্তারিত খতিয়ে দেখার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। যে পরিমাণ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ৮০ শতাংশ অর্থাত্ ১১.৮৫ লক্ষ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বাজারে ফিরে এসে এসেছে। নোট বাতিলের ফলে বাজারে যে নগদের সংকট দেখা দিয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে নতুন নোট সরবরাহ বজায় রাখার আশ্বাসও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।


রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল বলেছেন, বিস্তারিত আলোচনা করেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর যে ফলশ্রুতি দেখা দেবে, সে বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছিল। এজন্যই সমগ্র পরিকল্পনা, প্রক্রিয়া এবং এক রূপায়ণ গোপনীয়তা বজায় রাখার দিকটি  ভেবেই নেওয়া হয়েছে। নোট বাতিলের ফলে যে তাত্ক্ষণিক অসুবিধা দেখা দেবে, তা জানত সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। এই অসুবিধা মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পঞ্চম পাক্ষিক ঋণনীতি পর্যালোচনার পর পটেল বলেছেন, মানুষের সমস্যার দিকটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং এই ভোগান্তির সময় যাতে কমানো যায় তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর আর গাঁধী বলেছেন, বাতিল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে যে পরিমাণ অর্থ বাজারে ছিল তার মধ্যে ৮০ শতাংশ অর্থাত্ ১১.৮৫ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে ফিরে এসেছে।  তিনি আরও বলেছেন, আরবিআই এবং সরকারের নোট ছাপানোর প্রক্রিয়া পুরোদমে চলছে। দেশের প্রতিটি জায়গায় নোট পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি জানিয়েছেন, ১০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন নোটে প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা সরবরাহ করা হয়েছে।এই সময়পর্বে আরবিআই কাউন্টার ও ব্যাঙ্কগুলি থেকে ছোট অঙ্কের ১৯.১ বিলিয়ন পিস নোট সরবরাহ করা হয়েছে। গত তিনবছর সময়েও এত নোট সরবরাহ করা হয়নি বলেও তিনি জানিয়েছেন।

পটেল জানিয়েছেন, বেশি পরিমাণে ৫০০ ও ১০০ টাকার নোট ছাপানোর লক্ষ্যে টাঁকশালগুলিকে গত দুসপ্তাহে রিক্যালিব্রেট করা হয়েছে।

বাজারে পর্যাপ্ত নতুন নোটের সরবরাহ রয়েছে বলেও আরবিআইয়ের দাবি। অযথা বাড়িতে নোট মজুত না করার আর্জিও জানিয়েছেন ডেপুটি গভর্নর।

টাকা তোলার সর্বোচ্চ সীমার ওপরও আরবিআই ধারাবাহিকভাবে নজর রেখে চলেছে।তিনি বলেছেন, মানুষের চাহিদার দিকটি খেয়াল রাখা হয়েছে এবং সেই অনুসারে সংশোধনও করা হচ্ছে।

আরবিআই-এর ব্যালেন্সশিটে নোট বাতিলের কোনও প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন পটেল।

পুরানো নোট জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হবে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে গাঁধী বলেছেন, মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে বিষয়টি স্থির হবে। এখনও পর্যন্ত ওই সময়সীমা ৩০ ডিসেম্বর।

১০০০ টাকার নোট ছাপানো কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরেও গাঁধী বলেছেন, এক্ষেত্রেও মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই সময়মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২০০০ টাকার নোটের সরবরাহও বাড়বে বলে জানিয়েছে আরবিআই।