চেন্নাই: ভারতের বিচার ব্যবস্থায় কোনও মামলার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অত্যধিক বিলম্ব কোনও নতুন ঘটনা নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিন ধরে চলে মামলা। কিন্তু তার জন্য আদালত বিচাররপ্রার্থীর কাছ ক্ষমা চাইছে, এই ঘটনা বিরল। সেটাই দেখা গেল মাদ্রাজ হাইকোর্টে। ছেলের মৃত্যুর ২৪ বছর পরে অবশেষে বিমা সংস্থার কাছ থেকে টাকা পাচ্ছেন এক মহিলা। ন্যায্য অধিকার পাওয়ার জন্য এতদিন অপেক্ষা করতে হওয়ায় তাঁর কাছে ক্ষমা চাইল হাইকোর্ট।


১৯৯৩ সালের ১৮ মে এক দুর্ঘটনায় বাক্কিয়াম নামে ওই মহিলার ছেলে লোকেশ্বরণের মৃত্যু হয়। তিনি লরি চালাতেন। একটি সরকারি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় লোকেশ্বরণের। মোটরযান আইনে বিমার টাকা চাওয়ার বদলে ভুলবশত শ্রমিক আইনে টাকা দাবি করেন বাক্কিয়াম। তাঁর সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর তিনি মোটরযান আইনে ৫ লক্ষ টাকা চেয়ে নতুন করে আবেদন করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা সেই আবেদনের বিরোধিতা করে বলে, প্রথমে শ্রমিক আইনে টাকার আবেদন করেছিলেন বাক্কিয়াম। ফলে তাঁর দ্বিতীয় আবেদন গ্রাহ্য হওয়ার কথা নয়। তবে ট্রাইব্যুনাল বিমা সংস্থার দাবি খারিজ করে দিয়ে বাক্কিয়ামকে ৩.৪৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। লোকেশ্বরণ যে সংস্থায় কাজ করতেন তাদের এবং রাজ্য পরিবহণ নিগমকেও সম পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। ট্রাইব্যুনালের এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিমা সংস্থা। তবে তাদের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে।

বিচারপতি এন শেষাশি বলেছেন, ‘১৯৯৩ সালের মে মাসে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ২৪ বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। এই মা এখনও আর্থিক সহায়তা পাননি। তাঁকে এখনও প্রতিকারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল তাঁর জন্য যে প্রতিকারের ব্যবস্থা করেছে, সেক্ষেত্রেও আরও বিলম্ব হতে পারে। বিমা সংস্থা এখনও টাকা দিতে রাজি হচ্ছে না। একজন নাগরিকের জীবন মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। তিনি বাবা-মাকে যে সাহায্য করতে পারতেন সেটাও মূল্যহীন হয়ে গিয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে বাক্কিয়ামকে টাকা দিতে হবে।’