নয়াদিল্লি: বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রুখতে অন্তত ১৪০টি সন্দেহজনক জায়গা চিহ্নিত করেছে বিএসএফ। অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। একইসঙ্গে স্থানীয় দালালচক্র, যারা রোহিঙ্গাদের এদেশে ঢুকতে সাহায্য করছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযানও শুরু করা হয়েছে। এমনটাই জানালেন বাহিনীর শীর্ষ কর্তা।


এদিনই শেষ হয় চারদিনের বিএসএফ ও বিজিবি-র মধ্যে দ্বিবার্ষিক বৈঠক। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রুখতে বিভিন্ন পরিকল্পনা তৈরি করেছে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীই। বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন বিএসএফ-এর ডিজি কে কে শর্মা। অন্যদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আবুল হোসেন।


বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে হোসেন আশ্বাস দেন, বাংলাদেশ প্রশাসনের নীতি অত্যন্ত পরিষ্কার। তা হল, বাংলাদেশ বা ভারতে নাশকতা চালানোর জন্য সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে তাদের ভূমিকে ব্যবহার করা যাবে না। হোসেন জানান, ভারতের মতো, মায়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ।


অন্যদিকে, বিএসএফ প্রধান জানান, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রচুর রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে, কোনও না কোনও সময়, তারা ভারতে প্রবেশ করতে চাইবে।


শর্মা বলেন, বিজিবি আশ্বাস দিয়েছে, এদেশে প্রবেশ করার সমস্ত রাস্তায় অতিরিক্ত চেকপয়েন্ট বসানো হবে। যাতে কেউ অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ না করতে পারে।


বিএসএফ ডিজি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রায় ৪,০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ১৪০টি দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখান দিয়ে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পার করতে পারে।


তিনি জানান, প্রতিটি জায়গায় বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া, প্রযুক্তিরও সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দেশের অন্য প্রান্ত থেকে ওই গ্যাজেটগুলি পূর্ব সীমান্তে আনা হয়েছে।


শর্মা যোগ করেন, নজরদারির পাশাশাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার থেকে তথ্য জোগাড় করে স্থানীয় দালালচক্রগুলি চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে। ডিজি-র মতে, এরা হল উভয় দিকের অপরাধী। এদের সংগঠিত নেটওয়ার্ক রয়েছে। এদের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ হয়।


বিজিবি প্রধান জানান, বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের নাম নথিভুক্তিকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, এটা মায়ানমারের সমস্যা। আমাদের নয়। পাঁচ লক্ষ রোহিঙ্গা ইতিমধ্যেই চলে এসেছে। বর্তমানে, সরকারের নির্দেশে তাদের কক্সবাজারে রাখা হয়েছে। না হলে, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।