আগরতলা: চারদিন ধরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটকে থাকা ৩১ রোহিঙ্গার মধ্যে সাত মহিলা, ১৭টি শিশুকে ত্রিপুরার আদালতে জামিন দিলেও কেউ তাদের হয়ে জামিনের বন্ড পেশ করতে না আসায় তাদের জেলেই পাঠানো হল। তাদের কৌঁসুলি প্রসেনজিত্ দেবনাথ জানান, পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা ও দায়রা বিচারক এস এল ত্রিপুরা ওই মহিলা, শিশুদের জামিন মঞ্জুর করেন, দলের বাকি সাত পুরুষকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠান। দলটি সম্ভবত জম্মু ও কাশ্মীর থেকে এসেছে। ১৮ জানুয়ারি থেকে ত্রিপুরায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাটাতারের ওপারে নো ম্যান্স ল্যান্ডে তারা আটকে ছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে বিএসএফ তাদের মঙ্গলবার পশ্চিম ত্রিপুরার আমতোলি থানার হাতে তুলে দেয়।
রোহিঙ্গাদের কৌঁসুলি সওয়াল করেন, ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত হাইকমিশনারের গৃহীত প্রস্তাবে সই করেছে, ফলে ওদের বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বলা যায় না। মায়েরা না থাকলে নিরাপরাধ শিশুগুলিকে দেখাশোনার কেউ থাকবে না। আমতোলি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি প্রণব সেনগুপ্ত জানান, আদালত মহিলা, শিশুদের জামিন মঞ্জুর করে, কিন্তু কেউ জামিনের বন্ড দিতে না আসায় ওদের বিশালগড় কেন্দ্রীয় জেলে পাঠানো হয়। জেল সূ্ত্রে খবর, ওদের অন্য বন্দিদের মতোই সরকারের সুপারিশমতো দিনে তিনবার খাবার দেওয়া হচ্ছে। ১৭টি বাচ্চাকে মায়েদের সঙ্গেই আলাদা সেলে রেখেছে জেল কর্তৃপক্ষ। বাকি সাত পুরুষকে ছেলেদের জায়গায় পৃথক কুঠুরিতে রাখা হয়েছে।
এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত প্রহরী বাহিনীর বিরোধ হয় সম্প্রতি। দুপক্ষেরই দাবি, ওপক্ষ রোহিঙ্গাদের তাদের ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে বিএসএফ, বিজিবি-র বৈঠকে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ওদের ত্রিপুরার থানার হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৭ ও ২০১৮য় যথাক্রমে ১২ ও ৬২ রোহিঙ্গা ধরা পড়ে ত্রিপুরায়।
২০১৭-র অক্টোবরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দেশের সব রাজ্যকে তাদের ভূখণ্ডে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে নজরে রাখতে বলে। মন্ত্রক জানায়, কেন্দ্র মনে করে, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে আসা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা দেশের সম্পদে বোঝা হিসাবে ভাগ বসাচ্ছে, দেশের নিরাপত্তা, সুরক্ষাকেও চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলেছে।