বিজেপি ও জ্যোতিরাদিত্যের মধ্যে কী ধরনের সমঝোতা হয়েছে, তা এখন স্পষ্ট। কিন্তু এই সমঝোতায় পৌঁছনোর ব্যাপারে কে এবং কীভাবে কাজ করেছিলেন, তা নিয়ে এখনও সাসপেন্স রয়ে গিয়েছে।
কিন্তু জ্যোতিরাদিত্য গৈরিক শিবিরে যাওযার পর এ ব্যাপারে কিছু কিছু তথ্য বাইরে আসতে শুরু করেছে। এমনিতে অপারেশন কমল-র পুরো কৃতিত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে জাফরের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা চলছে।
অন্দরমহলের খবর, জ্যোতিরাদিত্যের মনের কথা সবচেয়ে প্রথমে যিনি অমিত শাহর কানে তুলেছিলেন, তিনি জাফর। এই ঘটনা প্রায় দুই মাস আগের। দিল্লির টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে বিতর্কে জাফরকে বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যায় । তিনি দলের ন্যাশনাল প্যানেলিস্ট। জ্যোতিরাদিত্য ও জাফর-দুজনের বন্ধু এক ব্যক্তি। তিনি সাংসদও। তাঁর মাধ্যমেই প্রথম কথাবার্তা শুরু হয়। জ্যোতিরাদিত্যর কংগ্রেস ছাড়ার আলোচনা প্রথমে তিন বন্ধুর মধ্যেই শুরু হয়। তাঁরা দিল্লির দুটি হোটেলে বেশ কয়েকবার কথাবার্তা বলেন বলে খবর সূত্রের। এরপরই বিজেপির উপরমহলে জ্যোতিরাদিত্যর কথা পৌঁছে যায়। জ্যোতিরাদিত্য তাঁর মর্যাদা নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলেন। দিগ্বিজয় সিংহ ও কমলনাথের ব্যবহারে তিনি খুবই দুঃখিত ছিলেন। আর এতেই কথা এগোয়।
গতকাল যখন হোলি উত্সব চলছিল, তখন জ্যোতিরাদিত্য নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়ে গুজরাত ভবনে পৌঁছে যান। সেখানে চলে আসেন অমিত শাহও। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে গিয়ে দেখা করেন জ্যোতিরাদিত্য। গাড়িতে ছিলেন অমিত শাহ। সেইসঙ্গে দেখা গিয়েছিল জাফরকেও। মোদির সঙ্গে জ্যোতিরাদিত্যর বৈঠকের সময় ছিলেন তিনি। আর সে কথা সঙ্গে সঙ্গেই চাউর হয়ে যায় এবং জ্যোতিরাদিত্যকে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে নিয়ে আসার ব্যাপারে জাফরের ভূমিকা নিয়ে কানাঘুঁষো জোরদার হয়।
গত ৬ মার্চ বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার ছেলের রিশেপশন ছিল। সেখানে ভিআইপি সারিতে বসেছিলেন অমিত শাহ। তাঁর একদিকে বলে ছিলেন পিযুষ গোয়েল ও অন্যদিকে শিবরাজ চৌহান। তাঁর পাশে নরেন্দ্র তোমর। অমিত শাহ তাঁর সামনে বসিয়েছিলেন জাফরকে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে জাফরকে মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য ভোপালে পাঠানো হয়। সেই সময় মধ্যপ্রদেশের নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। আর সেটাই জ্যোতিরাদিত্যকে বিজেপি-তে সামিল করার ব্যাপারে কাজে দিল।