কলকাতা ও ভূবনেশ্বর: রোজভ্যালিকাণ্ডে জামিন পেয়ে গেলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, এখনও জেল হেফাজতে তৃণমূলের আরেক সাংসক তাপস পাল। সুদীপের মতো তিনিও ওড়িশাতেই! সুদীপের সঙ্গে ভুবনেশ্বরের এই অ্যাপোলো হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন!
রোজভ্যালিকাণ্ডে সিবিআই সম্প্রতি যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিয়েছে, তাতে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তাপস পালেরও নাম ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আনা হয়?
সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে সিবিআই দাবি করে, তাপস পাল তাঁর অভিনেতা এবং রাজনীতিক, দুই সত্ত্বাকেই ব্যবহার করেছেন। একদিকে মঞ্চ থেকে নায়কোচিত ভঙ্গিতে ভাষণ দিয়েছেন। আর সেই ভাষণে বারবার নিজের সাংসদ পরিচয় এবং রাজনৈতিক যোগাযোগের কথা তুলে ধরেছেন। যা শুনে এজেন্টরা ভরসা পেয়েছেন।
সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে রোজভ্যালির অনুষ্ঠানে দেওয়া তাপস পালের বক্তৃতার একটি অংশও সিবিআই উল্লেখ করে। সিবিআই-এর দাবি, যেখানে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, গৌতম কুণ্ডু ভাল কাজ করছেন। রোজভ্যালি ভাল কোম্পানি। সরকার যা করতে পারেনি, গৌতম কুণ্ডু কর্মসংস্থান দিয়ে তা-ই করছেন। আপনারা ভাল করে কাজ করুন। আমরা পাশে আছি।
সিবিআইয়ের দাবি, এর বিনিময়ে রোজভ্যালি থেকে আর্থিক ও নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তাপস পাল। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করে, তাপস পাল যে শুধু নিজে রোজভ্যালি থেকে বেতন নিয়েছেন এমন নয়।
তাঁর স্ত্রী রোজভ্যালির একটি চ্যানেলে অনুষ্ঠান করতেন। তাঁর মেয়ে রোজভ্যালির প্রযোজনায় ছবি করেছেন। এমনকী, নিজের ভাইঝিকে পর্যন্ত তিনি রোজভ্যালিতে মোটা বেতনের চাকরি পাইয়ে দেন।
চার্জশিটে সিবিআই এই দাবিও করে, তাপস পাল নিজে রোজভ্যালি থেকে বেতন বাবদ পেয়েছেন মোট ২৬ লক্ষ ১৫ হাজার ৬৪৭ টাকা।
আর এই সংস্থা থেকে তাঁর পুরো পরিবার বেতন বাবদ পেয়েছে ৫৫ লক্ষ ১০ হাজার ১৫৫ টাকা।
চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, বেতন ছাড়াও রোজভ্যালি থেকে নিয়মিত আর্থিক সুযোগ সুবিধা আদায় করতেন তিনি। ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গৌতম কুণ্ডুর অফিসে গিয়ে ২ লক্ষ টাকা নেন তাপস পাল।
রোজভ্যালির এক ক্যাশিয়ারের উপস্থিতিতে এই লেনদেন হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তাপস পাল নিজের গাড়ির চালককে পাঠিয়ে রোজভ্যালি থেকে টাকা আনাতেন।
তবে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম আসার পরও সুদীপ জামিন পেয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ তাপসের কী হবে? সেটাই এখন প্রশ্ন।