নয়াদিল্লি: কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচন চুকে গিয়েছে। এই অবস্থায় এক ধাক্কায় পেট্রোল ও ডিজেলের দাম লিটারে চার টাকা করে বাড়তে পারে। কর্নাটকে ভোটের আগে তেলের দাম বৃদ্ধি যে পর্যায়ে ছিল, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি সেই পর্যায়ে ফিরতে চাইলে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটানো হতে পারে বলে মনে করছে ব্রোকারেজ সংস্থাগুলি।
কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই গত সোমবার পেট্রল-ডিজেলের দৈনিক মূল্য সংশোধনের রেওয়াজে ফিরে গিয়েছে তেল সংস্থাগুলি। ১৯ দিন বিরতির পর এই দুটি জ্বালানির মূল্য সংশোধন করে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি), হিন্দুস্তান পেট্রলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (এইচপিসিএল) এবং ভারত পেট্রলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (বিপিসিএল)। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত পেট্রলের দাম ৬৯ পয়সা বেড়েছে। এরমধ্যে আজ লিটারে ২২ পয়সা বেড়ে দিল্লিতে পেট্রলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৫.৩১ টাকা।এই দাম গত পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ। ডিজেলের দাম এই কদিনে প্রতি লিটারে ৮৬ পয়সা বেড়েছে। এর মধ্যে আজ বেড়েছে ২২ পয়সা। রাজধানী দিল্লিতে প্রতি লিটারে ডিজেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৬৬.৭৯ টাকা। এর আগে ডিজেলের দাম এতটা বাড়েনি।
কোটাক ইন্সস্টিটিউশনাল ইকুইটিজের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমাদের হিসেব অনুযায়ী লিটারে ২.৭০ টাকার মোট বিপণন মার্জিন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বিপণন সংস্থাগুলির ডিজেলের দাম লিটার সাড়ে তিন থেকে চার টাকা এবং পেট্রলের দাম লিটারে ৪ থেকে ৪.৫৫ টাকা দাম বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেল ও পেট্রলের দাম ও ডলারের তুলনায় টাকার দাম অপরিবর্তিত থাকবে, এই অনুমান করেই এই মূল্যবৃদ্ধির অনুমানের কথা জানানো হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে অশোধিত তেলের দাম বেড়েছিল, ডলারের তুলনায় অনেকটাই পড়েছিল টাকার দাম। কিন্তু কর্নাটকে ভোটের আগে তেলের দাম আটকে ছিল একটানা ১৯ দিন। এর ফলে মোট বিপণন মার্জিন প্রতি টারে কমে হয় ০.৫ থেকে ০.৭ টাকা।
এর আগে গত সপ্তাহে আইসিআইসিআই সিকিউরিটিজের রিপোর্টেও গত ২৪ এপ্রিল থেকে মূল্য সংশোধন বন্ধ থাকার কারণে পেট্রল ও ডিজেলের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।
এই দুই জ্বালানির দৈনিক মূল্য সংশোধন ফের শুরু হয় ১৪ মে থেকে।বিশ্ববাজারে অশোধিত তেলের দামের বৃদ্ধি ও ডলারের তুলনায় টাকার দাম পড়ায় তেল সংস্থাগুলির ৫০০ কোটি টাকার মতো লোকসান হয়।
বিশ্ববাজারে পেট্রলের দাম গত ২৪ এপ্রিল যেখানে ছিল ব্যারেল পিছু ৭৮.৮৪ ডলার, সেখানে গত ১৪ মে ওই দাম বেড়ে হয় ৮২.৯৮ ডলার। একইভাবে ওই সময়পর্বে ডিজেলের দামও প্রতি ব্যারেলে ৮৪.৬৮ ডলার থেকে বেড়ে হয় ৮৮.৯৩ ডলার। এই সময় পর্বে ডলারের তুলনায় টাকার দামও অনেকটাই কমেছে।