নয়াদিল্লি: উন্নাওয়ের ধর্ষিতাকে লখনউ থেকে বিমানে উড়িয়ে নয়াদিল্লি নিয়ে গিয়ে এইমস-এ ভর্তি করাতে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আরও ভাল চিকিত্সার জন্য তাকে স্থানান্তরিত করতে বলল শীর্ষ আদালত। সোমবার এই নির্দেশ দেওয়ার কিছুক্ষণ আগেও নির্যাতিতা ও তার আইনজীবীকে সরানোর ব্যাপারে শুনানি শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত রাখে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। কেননা তার পরিবারের কেউ আদালতে এসে তাকে সরানোর দাবি করেনি। তবে পরে মেয়েটির পরিবারের কৌঁসুলি বিচারপতি দীপক গুপ্তা ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোসের বেঞ্চের সামনে এসে বলেন, নির্যাতিতার মা চান, মেয়ের অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক হওয়ায় তাকে ভাল চিকিত্সার জন্য এইমস-এ পাঠানো হোক।
নির্যাতিতার আইনজীবী ডি রামকৃষ্ণ রেড্ডির বক্তব্য শুনে তাকে লখনউয়ের কিং জর্জস মেডিকেল কলেজ থেকে এইমস পাঠাতে বলে বেঞ্চ।
শুক্রবার শুনানির দিন স্থির করে সু্প্রিম কোর্ট এও জানায়, নির্যাতিতার আইনজীবীর পরিবারও প্রয়োজন মনে করলে তাঁকে দিল্লিতে চিকিত্সার জন্য পাঠানোর ব্যাপারে আবেদন করতে পারে।
প্রসঙ্গত, উন্নাওয়ের মেয়েটিকে ২০১৭ সালে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। ২০১৮-র এপ্রিল থেকে এই ধর্ষণ মামলায় মূল অভিযুক্ত চারবারের এই বিধায়ক জেলে রয়েছেন। কিন্তু কারাগারের অন্তরাল থেকে তাঁর নির্দেশেই কয়েকদিন আগে মেয়েটিকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মেয়েটি, তার আইনজীবী ও তার দুই আত্মীয়া গাড়িতে যাচ্ছিলেন। একটি ট্রাক তাদের গাড়িতে ধাক্কা মারলে মেয়েটি, আইনজীবী মারাত্মক জখম হয়। দু্ই আত্মীয়া মারা যান।
লখনউয়ের হাসপাতালের ডাক্তাররা আজই জানান, মেয়েটির অবস্থা সিরিয়াস, তবে স্থিতিশীল। তাঁদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ষিতার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। সে নির্দেশ বুঝতে পারছে, চোখও খুলছে। সব বুঝতে পারছে। ভেন্টিলেটর খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তবে রক্তচাপ ঠিক রাখতে তাকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তার আইনজীবী ভেন্টিলেটর ছাড়াই শ্বাস নিচ্ছেন। তবে তাঁর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না, গভীর কোমায় আছেন এখনও।
পাশাপাশি দিল্লির এক আদালত মূল অভিযুক্ত সেঙ্গারকে উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের জেল থেকে সরিয়ে রাজধানীর তিহার জেলে রাখতে বলল। আজ সেঙ্গার ও শশী সিংহ নামে তাঁর সহযোগীকে জেলাশাসক দীনেশ শর্মার নির্দেশক্রমে আদালতে তোলা হয়। শশী মেয়েটিকে টোপ দিয়ে সেঙ্গারের বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। শশীকেও তিহারে পাঠাতে বলেছে আদালত।
ধর্ষিতা গাড়ি দুর্ঘটনায় জখম হওয়ার ব্যাপারে সেঙ্গার ও ৯ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ রুজু করেছে সিবিআই। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট রোজ শুনানি করে ৪৫দিনের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। মূল মামলার পাশাপাশি নির্যাতিতার বাবাকে অস্ত্র আইনে জড়ানো, তাঁর পুলিসি হেফাজতে মৃত্যু ও মেয়েটির গণধর্ষণ সংক্রান্ত আরও তিনটি মামলা দিল্লিতে সরানো হয়েছে।