# লোয়ার মৃত্যু কোন পরিস্থিতিতে, কী থেকে হয়েছিল, তার নিরপেক্ষ, ন্যায্য তদন্ত করতে হবে, জনগণের এই দাবির প্রতি কংগ্রেস দায়বদ্ধ বলে জানান কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা।
# এ ব্যাপারে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে বিজেপি যেভাবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপব্যাখ্যা করছে, সেটা তাদের ত্রস্ত হয়ে ওঠার লক্ষণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিচারক লোয়ার মৃত্যুর তদন্তের দাবি নাকচ করে সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায় মানতে নারাজ কংগ্রেস। বিজেপি সুপ্রিম কোর্টের রায় হাতিয়ার করে এদিন দাবি করে, লোয়ার মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে গুচ্ছ গুচ্ছ পিটিশনের পিছনে অদৃশ্য হাত আছে রাহুল গাঁধীর। প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস বলেছে, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, বিচারক লোয়ার মৃত্যু নিয়েও সস্তার রাজনীতি করছে বিজেপি। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের 'অপব্যাখ্যা করে' বিজেপি 'ভুয়ো রাজনৈতিক ফায়দা' তুলতে চাইছে। লোয়ার মৃত্যুর ব্যাপারে 'যেসব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি', সেগুলির মীমাংসায় পক্ষপাতহীন তদন্ত চেয়েছে কংগ্রেস।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে নিশানা করে রাহুল গাঁধী বলেন, সত্য নিজের পথে এগিয়ে গিয়ে ওনার মতো লোকজনকে ঠিক ধরে ফেলে।
কংগ্রেস সভাপতির পাশাপাশি দলের কমিউনিকেশনস ইনচার্জ রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতে নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। বিচারক লোয়ার মৃত্যুর পিছনে সত্যিটা বেরিয়ে আসবেই একদিন। তিনি বিস্ময়ের সুরে বলেন, ক্ষমতাসীন লোকজনরা যদিই এতটাই নিশ্চিত হন, লোয়ার মৃত্যুটা স্বাভাবিক ব্যাপার, তাহলে তদন্তের দাবি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন কেন! প্রধানমন্ত্রীর তো বলা উচিত, তিনি বিচারক লোয়ার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত ভাবে জানতে সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতে তদন্তের নির্দেশ দেবেন।
এর আগে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভিও বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অনেক প্রশ্ন নতুন করে উঠবে।
বিচারক লোয়ার মৃত্যুতে সন্দেহজনক কিছু নেই। তাই তার সিবিআই তদন্ত নিষ্প্রয়োজন। লোয়া মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বরং এ ধরনের প্রশ্ন তুলে বিচারব্যবস্থার বদনাম করার চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছে তারা।
শীর্ষ আদালত বলেছে, যেভাবে বম্বে হাইকোর্টের বরিষ্ঠ আধিকারিক ও বিচারপতিদের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে তা বিচারব্যবস্থার বদনামের চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। ৪ জন বিচারক বলেছেন, বিচারক লোয়ার মৃত্যুতে সন্দেহের কোনও কারণ নেই, তাঁদের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা নিরর্থক। এ ব্যাপারে পেশ করা নথিপত্রও খতিয়ে দেখা হয়েছে, তাতে পরিষ্কার, মৃত্যু স্বাভাবিক কারণেই ঘটেছে।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এএম খানবিলকর ও ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ বলেছে, এইসব আবেদন বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতার ওপর খোলাখুলি হামলা ছাড়া কিছু নয়। এই মামলা করা হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, রাজনৈতিক শত্রুতা মেটাতে। তবে লোয়া মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলাকারী, বরিষ্ঠ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেছেন, আজ ইতিহাসের কালো দিন, আদালত ভুল রায় দিয়েছে।
গুজরাতের সোহরাবুদ্দিন সেখ ভুয়ো সংঘর্ষ মামলার শুনানি চলছিল বিচারক লোয়ার আদালতে। আসামী ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সে সময় ২০১৪-র ১ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।