নয়াদিল্লি:  দিল্লির প্রশাসনিক প্রধান উপ রাজ্যপালই, তবে তিনি মন্ত্রিসভার কথা শুনতে বাধ্য। সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে বাধা সৃষ্টি করতে পারবেন না, উপরাজ্যপালের কোনও স্বতন্ত্র ক্ষমতা নেই জানাল সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ।



আজ বুধবার দেশের শীর্ষ আদালত সেই মামলার রায় দিল, যেখানে জানানো হল রাজধানী দিল্লির আসল প্রশাসনিক কর্তা কে? আজকের এই রায়ের ফলে দিল্লির আসল বস কে, এই নিয়ে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে দীর্ঘদিনের দড়ি টানাটানিতে ইতি পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টের একটি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন দিল্লির কেজরীবাল সরকার। সেখানে বলা হয় দেশের রাজধানীর আসল বস হলেন উপরাজ্যপাল। সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশ জারি রাখলেও, বলে দিল সমস্ত বিষয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না উপ রাজ্যপাল। মন্ত্রিসভার সঙ্গে আলোচনা করতে বাধ্য তিনি। কিন্তু সববিষয় যদি মন্ত্রিসভার সঙ্গে সহমত না হন উপরাজ্যপাল, তাহলে সেই বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে, জানিয়েছে আদালত।



শীর্ষ আদালতের এই রায় আম আদমি পার্টি বা দিল্লির রাজ্য সরকার, ভবিষ্যতে যেই আসুক তারজন্যে বড় স্বস্তির। কারণ, এরফলে দেশে যে গণতন্ত্র রয়েছে, সেটা আরও একবার প্রমাণিত হল। এই রায় একটা বিষয় পরিস্কার করে দিল, এখানে জনতা যে সরকারকে নির্বাচিত করবে, তার স্বাধীনভাবে কাজ করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী উপরাজ্যপাল দিল্লির প্রশাসনিক প্রধান হলেও, জনতার মতকেই প্রাধান্য দিতে, উপরাজ্যপালকে মন্ত্রিসভার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

উপরাজ্যপালকে মেকানিক্যাল ভাবে কাজ করতে হবে। অর্থাত্, ফাইল গেলে উপরাজ্যপালকে সই করতেই হবে এমন কোনও বাধ্যবাধ্যকতা নেই। সহমত না হলে, ফাইল রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে, কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথে বাধা হতে পারবেন না উপরাজ্যপাল।

তবে রাষ্ট্রপতির কাছে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রেই মতামত গ্রহণের জন্যে ফাইল পাঠাতে পারেন উপরাজ্যপাল। সেটা সবক্ষেত্রে করলে হবে না।

শীর্ষ আদালতের আজকের রায়ে দিল্লির কেজরীবাল সরকারের একপ্রকার জয়ই হল। কারণ, আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উপরাজ্যপালের মত চূড়ান্ত নয়। সংবিধানের আর্টিকেল ২৩৯ এএ অনুযায়ী, উপরাজ্যপাল প্রত্যেক বিষয়ে মন্ত্রিসভার পরামর্শ শুনতে বাধ্য। তাঁর স্বাধীন ভাবে কোনও কাজ করার কোনও অধিকার নেই। দিল্লির নির্বাচিত সরকারের সমস্ত সিদ্ধান্তে নাক গলাতে পারবেন না উপরাজ্যপাল, মত, প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ.কে. শিকরি এবং বিচারপতি এ.এম খানউইলকারের।