নয়াদিল্লি: ২০০৮-এর মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত লেফ্টটেন্যান্ট কর্নেল শ্রীকান্তপ্রসাদ পুরোহিতকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছে কংগ্রেস। বিরোধী দলের অভিযোগ, বিজেপি সরকার আরএসএস-র সঙ্গে যুক্ত সমস্ত অভিযুক্তদের ‘আড়াল’ করছে।


ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-র প্রধান শরদ কুমারের দু দফায় মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।

কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহর ট্যুইট, ‘কর্নেল পুরোহিত জামিন পেলেন। এটা প্রত্যাশিত ছিল। কারণ,  আরএসএসের সঙ্গে জড়িত সমস্ত অভিযুক্তদের বাঁচাচ্ছে বিজেপি সরকার’। দিগ্বিজয়ের অভিযোগ, ‘ অভিযুক্তদের রেহাই দেওয়ার জন্য দুবার এনআইএ প্রধানের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।অবসরের পরে তাঁকে হয়ত তাঁর কাজের জন্য উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে’।







এআইসিসি-র যোগাযোগ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন, জামিন পাওয়াটা পুরোহিতের দোষী বা নির্দোষিতা সাব্যস্ত হওয়ার সঙ্গে যুক্ত নয়। কারণ, তিনি এখনও বিচারাধীন।

সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘বর্তমান এনআইএ প্রধানের জায়গায় নরেন্দ্র মোদী সরকার কি দেশে কোনও যোগ্য পুলিশ অফিসার খুঁজে পাচ্ছেন না?’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের আশা, আইন নিজস্ব পথে চলবে। কোনও রকম ভয় বা পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই ঘটনার যথাযথ বিচার হবে’।

কংগ্রেসের এই অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তিনি বলেছেন, এটা বিচার বিভাগীয় প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন আগে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে হস্তক্ষেপের প্রশ্ন উঠছে কোথা থেকে?

তিনি আরও বলেছেন, কংগ্রেসের এই ইস্যুটা তোলা অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গেছে। যার বিচার পাওয়ায় সে পাবে। কারুর কথায় কিছু বদলে যাবে না।

২০০৮-এর ২৯ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার মালেগাঁও শহরে এক বিস্ফোরণে সাত জনের মৃত্যু হয়। ঘটনায় আহত হয়েছিলেন একশোরও বেশি। তদন্তে জানা যায়, মালেগাঁও শহরে মসজিদ লাগোয়া কবরস্থানে একটি মোটরসাইকেলে দু’টি বোমা রাখা ছিল। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে উঠে আসে ‘অভিনব ভারত’  নামে একটি কট্টর হিন্দু গোষ্ঠীর নাম। অভিযোগ ছিল, ‘অভিনব ভারত’-এর হয়ে ওই বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। ওই বছরের অক্টোবরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরের মাসে পুরোহিতকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু, এ বছর এপ্রিলে ৫ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়ে যান সাধ্বী প্রজ্ঞা।

বম্বে হাইকোর্টের পুরোহিতের জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যায়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন পুরোহিত। সেই আবেদনের ভিত্তি আন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।