নয়াদিল্লি: অরুণাচল প্রদেশে বিধানসভার অধিবেশন এক মাস এগিয়ে আনার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজ্যপাল জ্যোতিপ্রসাদ রাজখোয়া, সেই সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে কংগ্রেস সরকারকে ক্ষমতায় ফেরানোর নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

 

এই রায়ের ফলে উত্তরাখণ্ডের পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যেও ধাক্কা খেল বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার সুযোগ পেয়ে গেল কংগ্রেস। আদালতের এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নবাম তুকি বলেছেন, এর ফলে দেশে সুস্থ গণতন্ত্র রক্ষার পথ প্রশস্ত হবে।

 

গত বছরের শেষ দিক থেকেই অরুণাচলে রাজনৈতিক ডামাডোল চলছিল। ৬০ সদস্যের বিধানসভায় ৪৭ জন কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ২১ জনই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এরপরেই রাজ্যপাল বিধানসভার অধিবেশন এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন। অরুণাচল বিধানসভার ষষ্ঠ অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে। কিন্তু রাজ্যপালের নির্দেশে তা শুরু হয় গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকে। এই অধিবেশনেই সরকার পড়ে যায়।

 

রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তুকি। তবে এতদিন শীর্ষ আদালত কোনও রায় দেয়নি। এরই মধ্যে গত ২০ ফেব্রুয়ারি নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ক কালিখো পুল। তাঁকে সমর্থন করেন ১৮ জন বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ক এবং দু জন নির্দল বিধায়ক। এছাড়া ১১ জন বিজেপি বিধায়ক বাইরে থেকে নতুন সরকারকে সমর্থন করেন। কিন্তু এদিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই সরকারের বৈধতা খারিজ হয়ে গেল।

 

এদিন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জে এস খেহারের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে অরুণাচলে কংগ্রেস সরকারকে ক্ষমতায় ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি দীপক মিশ্র, এম বি লোকুর, পি সি ঘোষ এবং এন ভি রমানা। সুপ্রিম কোর্টের এই বেঞ্চ বলেছে, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর রাজ্যপালের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভায় যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা আর বহাল থাকছে না।