গোয়া: রেহাই পেয়ে গেল গোয়ায় ২০০৮ সালে ১৫ বছরের কিশোরী স্কারলেট কিলিংকে মাদকাচ্ছন্ন করে যৌন নিপীড়ন চালানোয় অভিযুক্ত দুজন। সমুদ্রতটে পর্যটকদের জন্য তৈরি বিলাস কক্ষের ওই দুই কর্মী, স্যামসন ডিসুজা ও প্ল্যাসিডো কারভালহোকে প্রমাণের অভাবে খালাস করে দিয়েছে এখানকার আদালত। অভিযোগ ওঠে, ব্রিটিশ মেয়েটিকে মাদকের ককটেল খাইয়ে নেশাচ্ছন্ন করে সমুদ্রে ফেলে রেখে গিয়েছিল তারা। ২০০৮-এর ১৯ ফেব্রুয়ারির ভোররাতে তার অর্ধনগ্ন, নিথর দেহ পাওয়া যায় আনজুনা বিচে।

অনিচ্ছাকৃত খুন, যৌন নিগ্রহ  ও মাদকাচ্ছন্ন করার অভিযোগ আনা হয়েছিল দুজনের বিরুদ্ধে।

ঘটনার দীর্ঘ ৮ বছর পর মেয়ের ওপর অত্যাচারে দোষীরা সাজা পাবে, সুবিচার মিলবে, এই আশায় গোয়ায় আসা স্কারলেটের মা ফিওনা ম্যাককিওনকে রায় ঘোষণার আগে তাঁকে বলতে শোনা যায়, দীর্ঘদিনের অপেক্ষায় রয়েছি এই দিনটার জন্য। নার্ভাস লাগছে। লড়াইয়ের ফল পাব, আশায় রয়েছি। কিন্তু রায় শুনে তীব্র হতাশায় ভেঙে পড়া ফিওনার প্রতিক্রিয়া, আমি বিধ্বস্ত! এমন রায় শুনতে হবে, ভাবিনি। তবে তিনি রায়কে উচ্চতর আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাতে চলেছেন।

স্কারলেট ধর্ষণ, খুন মামলার তদন্ত প্রথম করেছিল গোয়া পুলিশ। ঘটনাটি আত্মহত্যা, এই যুক্তিতে মামলাও খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু পরে মামলার ভার পায় সিবিআই। তারা দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেয়।



বিগত বছরগুলিতে এই মামলায় তিন সরকারি কৌঁসুলি, পাঁচ বিচারপতি বদল হয়েছেন। সাক্ষ্য দেননি মাইকেল ম্যানিয়ন নামে ঘটনার মূল প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্রিটিশ নাগরিক। তাঁকে সাক্ষ্য দেওয়াতে ব্রিটেন থেকে ভারতে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টার ক্রটি রাখেনি সিবিআই। কিন্তু ভারতে নিরাপত্তা সুরক্ষিত নয় বলে জানিয়ে তিনি আসতে রাজি হননি। যদিও তিনি স্নায়ুবৈকল্যে ভুগছেন বলে পরে শোনা গিয়েছিল। অভিযুক্তদের একজনকে মেয়েটির ওপর যৌন নিগ্রহ চালাতে দেখেছিলেন, পুলিশকে আগে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি। স্কারলেটের দেহ উদ্ধার হওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে তার সঙ্গে বাকি অভিযুক্তকে দেখতে পাওয়ার কথাও তিনি বলেছিলেন।

স্কারলেটের মর্মান্তিক পরিণতি গোয়ায় মাদকচক্রের দাপটের চেহারাটা সামনে তুলে এনেছিল। মেয়েটির  মা স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন। পিছনে ড্রাগ মাফিয়ারা কলকাঠি নাড়ছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।