নয়াদিল্লি: সংসদে চলতি বাজেট অধিবেশনে স্বাভাবিক কাজ না হওয়া দিনগুলির বেতন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণায় ভিন্নমত কেন্দ্রের শাসক জোটে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার গতকাল জানান, অধিবেশনে কংগ্রেস ও অন্যদের বিক্ষোভ, গণ্ডগোলে যে ২৩ দিন সংসদে কোনও কাজই হয়নি, সেই দিনগুলির বেতন তুলবেন না এনডিএ এমপিরা। কিন্তু ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই শরিক শিবসেনার দাবি, বিজেপি এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনও কথাই বলেনি। তাদের সাংসদরা ওই দিনগুলির বেতন তুলবেন।

বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব ভেস্তে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রই দায়ী বলে জানিয়ে উদ্ধব ঠাকরের দল বলেছে, আগামী মাসে কর্নাটক বিধানসভা ভোটের জন্য বিজেপিই চায়নি, সংসদে স্বাভাবিক কাজকর্ম হোক। শিবসেনা এমপি অরবিন্দ সাবন্ত অনন্ত কুমারের ঘোষণার পাল্টা বলেন, ওরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলোচনা করেনি আমাদের সঙ্গে। রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ভোটের সময়ই শরিকদের মনে পড়ে ওদের। তিনি বলেন, সংসদ না চললেও আমরা মানুষের সমস্যা, অভিযোগের ব্য়াপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি।আমাদের এমপিরা কাজ করেছেন। এই ইস্যুতে শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে একমত নয় বলে জানিয়ে দেন তিনি। কেন্দ্রের শাসক জোটে ১৮ জন সাংসদকে নিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক শিবসেনা। বিজেপির সাংসদ ২৭৫ জন।

আরেক শরিক রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির প্রধান তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়া বলেন, এনডিএ এমপিদের বেতন না তোলার সিদ্ধান্ত তাঁর জানা নেই।

বিজেপির নিজের সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে বলেন, তিনি রোজই রাজ্যসভায় গিয়েছেন, সভার কাজ না হয়ে থাকলে তিনি সেজন্য দায়ী নন।
যদিও শিবসেনা, কুশওয়ার বক্তব্য সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও অনন্ত কুমার জানিয়ে দেন, সব এনডিএ সাংসদই বেতন ছেড়ে দেবেন। তিনি পরিসংখ্যান দেন, এনডিএ-র ৪০০ সাংসদ ২৩ দিনের মোট বেতন ৩.৬৬ কোটি টাকা তুলবেন না। কংগ্রেসের 'নেতিবাচক', 'গণতন্ত্র-বিরোধী' মানসিকতার জন্যই সংসদের স্বাভাবিক কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এও বলেন, কংগ্রেস যে ধরনের রাজনীতি করছে, তাতে কর্নাটকে ক্ষতির মুখে পড়বে।

কংগ্রেস পাল্টা ২৩ দিনের বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্তকে 'গিমিক' বলে কটাক্ষ করেছে।
কংগ্রেস মুখপাত্র রাজ বব্বর বলেন, সরকার সংসদ চালাতে ব্যর্থ হয়েছে, মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে যে, বিরোধীরা সংসদের কাজ পণ্ড করেছে। দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। সরকারকে জবাব দিতে হবে, এমপিদের ২০০০ টাকার দৈনিক ভাতা না তুললে কি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাকের ডগায় যে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা নানা কেলেঙ্কারিতে নষ্ট হয়েছে, তা পুষিয়ে দেওয়া যাবে? সরকার আসলে মূল বিষয়গুলি থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে।