যোধপুর: কেন সলমন খানকে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় দোষী ঘোষণা করে ৫ বছরের কারাবাসের সাজা দেওয়া হল, তার কারণ ব্যাখ্যা করলেন বিচারক। তাঁর অভিমত, অভিযুক্ত জনপ্রিয় ফিল্মস্টার। লোকে তাঁকে মানে, তাঁকে ভক্তি, সমীহ করে। আর যেভাবে তিনি নিরীহ হরিণ হত্যা করেছেন, নির্বিচারে পশু শিকার করেছেন! বিচারক দেবকুমার খাতরি বলেন, সলমনের অপরাধমূলক কাজকর্ম করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, তিনি একমত।
সলমনের আজ ১০ হাজার টাকা জরিমানাও হয়েছে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে, যেখানে আজকের রাতটা থাকবেন তিনি।


৫২ বছর বয়সি সুপারস্টার ছাড় না পেলেও মামলায় তাঁর সহ অভিযুক্তরা অর্থাত্ তব্বু, সেফ আলি খান, সোনালি বেন্দ্রে, নীলম কোঠারি, সবাইকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে আদালত। সরকারি কৌঁসুলি মহিপাবল বিশনয় সাংবাদিকদের বলেন, বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনে সলমনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বাকি তারকারা ছাড় পেয়েছেন।

সলমন অবশ্য অনেক আগেই বিপন্ন প্রজাতির জানোয়ারকে গুলি করে মারার অভিযোগ নাকচ করেছেন, তাঁকে অহেতুক কৃষ্ণসার শিকার মামলায় জড়ানোয় অভিযুক্ত করেছেন রাজ্যের বন দপ্তরের কর্মীদের। সলমনকে ২০০২ সালে ফুটপাথবাসী গৃহহীন লোককে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলার হিট অ্যান্ড রান মামলায় ২০১৫য় নির্দোষ বলে জানায় আদালত। যদিও সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।

২০১২ সালে এক সাক্ষাত্কারে সলমন বলেছিলেন, তাঁকে রেহাই দিয়ে মামলা দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হলে বিচারকের সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলাগুলি বছরের পর বছর গড়াচ্ছে। নিজের একটি মেগাহিট ছবির নাম ধার করে সলমন মন্তব্য করেন, আমায় মুক্তি দিতে হলে চাই একজন দাবাং (নির্ভীক) বিচারক।

এদিকে সলমনের আইনজীবীরা দায়রা আদালতে অভিনেতাকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়ার রায়কে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলে জানিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন তোলেন। সলমনের আইনি পরামর্শদাতা আনন্দ দেশাই জানান, আদালতের রায়কে তাঁরা সম্মান করছেন, কিন্তু তাঁরা অবাক হয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রায় খতিয়ে দেখছি আমরা। আমাদের হতবাক করেছে রায়। কারণ যে দুটি মামলায় রাজস্থান হাইকোর্টে সলমন খালাস পেয়েছেন, এমনকী একই রাতে অস্ত্র আইন সংক্রান্ত অভিযোগের যে মামলায়ও মাননীয় মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে রেহাই দিয়েছেন, সেগুলির তথ্য আর এই মামলার গোটা তদন্ত, যাবতীয় তথ্য একই। বর্তমান মামলায় মাননীয় আদালত বাকি সহ অভিযুক্তদের রেহাই দিয়েছে, যার মানে দাঁড়ায়, সেদিন মাঝ রাতে যোধপুরের বাইরে দূরে নির্জন এক জায়গায় সলমন একাই শিকারে বেরিয়েছিলেন! আমরা মাননীয় দায়রা আদালতে আবেদন করে দ্রুত শুনানি চাইব।