নয়াদিল্লি:করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান খুব শীঘ্রই হতে চলেছে। কিন্তু এখন সবার মনেই একটা প্রশ্ন, করোনা ভ্যাকসিন এলে তার দাম কত হবে? কতদিনে ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছবে? অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিনের অ্যাস্ট্রেজেনিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে পরীক্ষা করছে পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। সংস্থার সিইও আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, এই ভ্যাকসিনের দাম ভারতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে হবে।

এক অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে পুনাওয়ালা বলেছেন, ২০২১-এর প্রথম ত্রৈমাসিকেই অক্সফোর্ডের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডোজ চলে আসবে। পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষকে এই ভ্যাকসিনের জন্য পাঁচ থেকে ছয়শো টাকা দিতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, ভারত সরকারকে ভ্যাকসিন সস্তা দামে দেওয়া হবে। সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও জানিয়েছেন, ভারতই তাঁদের অগ্রাধিকার।

অন্যদিকে, মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা মডার্না সোমবার দাবি করেছে যে, তাদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ৯৫.৫ শতাংশ কার্যকরী। এর আগে আমেরিকা ও জার্মানির পক্ষ থেকে যৌথভাবে ফাইজার ও বায়োটেকও এ ধরনেরই দাবি করেছিল। এই দুটি ভ্যাকসিনেরই তৃতীয় পর্বের পরীক্ষায় ভালো ফল এসেছে বলে দাবি এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর ডিসেম্বরেই ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়ার কাজ শুরু হতে পারে।

একদিকে মডার্না ও ফাইজার-বায়োটেকের মতো কোম্পানি ঘোষণা করেছে যে, বড় আকারে তৃতীয় পর্বের পরীক্ষায় ফলাফল সফল হয়েছে। অন্যদিকে, এমন ১০ টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন রয়েছে, যাদের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা চলছে। ফাইজারের ভ্যাকসিনের পর্যবেক্ষণকারী এক নিরপেক্ষ প্যানেল বলছে, তারা দেখেছে যে, কোভিড-১৯ রোখার ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশ কার্যকরী। মডার্নার ভ্যাকসিন নিয়েও এ ধরনের গবেষণা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই ভ্যাকসিন ৯৪.৫ শতাংশ কার্যকরী।

মার্কিন ফুড অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মাপকাঠি অনুসারে, অনুমোদন পেতে গেলে ভ্যাকসিন অন্তত ৫০ শতাংশ কার্যকরী হতে হবে। সেক্ষেত্রে দুই ভ্যাকসিনেরই নিয়ন্ত্রক অনুমোদন পাওয়া কার্যত নিশ্চিত। এখনও পর্যন্ত পরীক্ষায় নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আশঙ্কা সামনে আসেনি। দুই কোম্পানির পক্ষ থেকেই জরুরিকালীন অনুমোদনের আর্জি জানানো হবে।

ভারতে ফাইজারের ভ্যাকসিন সংরক্ষণ নিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হবে। ফাইজারের ভ্যাকসিনকে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মজুত রাখতে হবে। এরসঙ্গে পাঁচদিন পর্যন্ত তা রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রায় রাখা যেতে পারে। তিন সপ্তাহ অন্তর এর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
মডার্নার ভ্যাকসিন ভারতের ক্ষেত্রে অনুকূল মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্টোরেজ ও বন্টনের ক্ষেত্রে মাইনাস ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রা চাই। ৩০ দিন পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রায় রাখা যেতে পারে। ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘরের তাপমাত্রায় রাখা যেতে পারে। চার সপ্তাহ অন্তর এর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।