নয়াদিল্লি: কোনও ব্যক্তি যদি ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে সেই ঘটনাকে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হবে না। বৃহস্পতিবার এমনই জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা উল্লেখ করেই এই রায় দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।


বিচারপতি এমবি লোকুর ও দীপক গুপ্তর বেঞ্চ বলেছে, ‘দাম্পত্য ধর্ষণ নিয়ে সংসদে অনেক বিতর্ক-আলোচনা হয়েছে। এই ঘটনাকে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হবে না বলেই স্থির করা হয়েছে। তাই স্ত্রীর সঙ্গে যৌন মিলনকে দণ্ডনীয় অপরাধ বলা যাবে না।’ বিচারপতিরা আরও বলেছেন, ’১৫ বছরের কম বয়সি মেয়েদের বিয়ে বেআইনি। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ১৮ বছরের কম বয়সি কলেজপড়ুয়ারা স্বেচ্ছায় যৌন মিলনে লিপ্ত হয় এবং গ্রেফতার হয়। এক্ষেত্রে ছেলেটির কোনও দোষ নেই। সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা অত্যধিক কঠোর। একইভাবে, কোনও ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়ে যদি পালিয়ে গিয়ে যৌন সম্পর্ক করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়। এক্ষেত্রেও বিচারে সমস্যা হয়।’

পকসো আইনে নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাকে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককেও এই আইনের বাইরে রাখা হয়নি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় এই আইনের পরিপন্থী। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে আইনজীবী গৌরব অগ্রবাল সুপ্রিম কোর্টে নাবালিকাদের যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আইনি সুরক্ষা দেওয়ার আবেদন জানান। তিনি দাবি করেন, সংসদ কোনও ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়েকে বিয়ে করে যৌন মিলন এবং অন্তঃসত্তা হতে বাধ্য করতে পারে না। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সি একটি মেয়ে শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ পরিণত নয়। তাই তার ইচ্ছা বা অনিচ্ছার বিষয়টি বিচার্য হওয়া উচিত নয়।

সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য বলেছে, ১৫ বছরের কম বয়সি কোনও মেয়ের সঙ্গে যৌন মিলনকে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে মেয়েটির সম্মতি থাকলেও ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হবে। মেয়েটির বয়স ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে হলেও ধর্ষণ বলে গণ্য করা হবে না। নাবালিকা বিয়ে রোখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।