নয়াদিল্লি: বাতিল হয়ে যাওয়া নোটের প্রায় ৯৯ শতাংশই ফিরে আসায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও মোদী সরকারকে একহাত নিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তিনি বলেছেন, ‘১৫ লক্ষ ৪৪ হাজার কোটি টাকার নোট বাতিল করা হয়। তার মধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকার নোট রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে ফেরেনি। অর্থাৎ মাত্র এক শতাংশ। এটা আরবিআই-এর লজ্জা। কারণ, তারাই নোট বাতিলের সুপারিশ করেছিল।’


এখানেই থেমে থাকেননি চিদম্বরম। তিনি আরও বলেছেন, ‘আরবিআই ১৬ হাজার কোটি টাকা ফেরত পেয়েছে। কিন্তু, নতুন নোট ছাপাতে তারা ২১ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। এই অর্থনীতিবিদদের নোবেল দেওয়া উচিত।’

চিদম্বরমের প্রশ্ন, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কালো টাকাকে আদতে সাদায় পরিণত করার কৌশল নয় তো? নোট বাতিলের সময় সরকার যে উদ্দেশ্যের কথা বলেছিল, সেটা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। নোট বদলের সময় ১০৪ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত।

অপর এক কংগ্রেস নেতা রণদীপ সূরজেওয়ালা বলেছেন, নোট বাতিল বিপর্যয় ছাড়া আর কিছু নয়। এই বিপর্যয়ের ফলে ১০৪ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ই দুর্নীতিগ্রস্তরা লাভবান হয়েছে। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত শুধু আরবিআই-এর পবিত্রতাই নষ্ট করেনি, এর ফলে বিদেশে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা ফের প্রমাণিত হল। তিনি দাবি করেছিলেন, নোট বাতিলের ফলে তিন লক্ষ কোটি কালো টাকার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু আরবিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, ১৫.৪৪ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১৬,০০০ টাকা ফেরত আসেনি। এই ১৬,০০০ কোটি টাকা বাতিল হওয়া নোটের মাত্র এক শতাংশ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বলেছিলেন, নোট বাতিলের ফলে জিডিপি ২ শতাংশ কমে যাবে। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। নোট বাতিলের ফলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সিপিএমও নোট বাতিল নিয়ে মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছে। সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, জাতীয়তা-বিরোধী কাজ করেছে মোদী সরকার। এর জন্য দেশ কোনওদিন তাদের ক্ষমা করবে না। দুর্নীতি, কালো টাকা, জাল নোট এবং সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করার কথা বলে নোট বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু এর ফলে গরিব মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একশোরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সরকারের কী উদ্দেশ্য ছিল সেটাই স্পষ্ট নয়।