আহমেদাবাদ: আজ ভারত সফরে আসছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এর আগেও ভারত সফরে এসেছেন আবে।কিন্তু তাঁর এবারের সফর শুধু জাপানের জন্যই নয়, ভারতের পক্ষেও দারুন তাত্পর্য্যপূর্ণ। কারণ, এবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ভারতকে বুলেট ট্রেন ‘উপহার’ দেবেন।
আবেকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত গুজরাতের আহমেদাবাদ শহর। বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে শহরকে। গতকাল রাতেই সবরমতী নদীর তীরে তিন রঙে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল। ভারত-জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বের বিষয়টি তুলে ধরতে নদীর তীরে সাজানো বড় বড় এলইডি স্ক্রিনে দেখা যায় দুই দেশের জাতীয় পতাকা। শুধু সবরমতীর তীরই নয়, সারা শহরেই আলোর রোশনাই। রাস্তায় রাস্তায় ভারত-জাপান মৈত্রীর সাক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আজ দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই বিমানবন্দরে পৌঁছবেন আবে।সেখানে তাঁকে স্বাগত জানাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমানবন্দর থেকেই সফররত জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আট কিলোমিটার রোড শো করবেন মোদী। দুটি দেশের প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে রোড শো করছেন-এমন ঘটনা সম্ভবত প্রথম ঘটতে চলেছে। রোড শো-য়ের আট কিলোমিটার পথ জুড়ে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরা হবে। সবমিলিয়ে বলা যায়, আমেদাবাদ এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে আমেদাবাদ।
রোড শো-এর যাত্রা পথে ২৮ টি মঞ্চ তৈরি হয়েছে। ওই মঞ্চগুলিতে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের শিল্পীরা নিজস্ব পোশাক করে নিজেদের শিল্প-সংস্কৃতি প্রদর্শন করবেন।
সবরমতী আশ্রমে গিয়ে শেষ হবে রোড শো। সন্ধে সাড়ে সাতটার সময় সেখানে পৌঁছবেন মোদী ও আবে।
সবরমতী আশ্রম থেকে মোদী ও আবে শহরের লাল দরওয়াজা এলাকার সিদী সৈয়দ মসজিদে যাবেন। এই মসজিদে জাফরির কাজ অনবদ্য। এই জাফরি গুজরাতের সরকারি প্রতীকে সামিল করা হয়েছে।
সেখানে থেকে ফিরে মোদীর আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।
শিঞ্জো আবের সফরের সবচেয়ে ঐতিহাসিক মুহূর্ত দেখা যাবে আগামীকাল। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। ১.২০ লক্ষ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের আওতায় মুম্বই থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত চলবে বুলেট ট্রেন। জাপানের সহায়তায় এই প্রকল্প গড়ে উঠবে। আগামীকালই অনুষ্ঠিত হবে দুই দেশের দ্বাদশ শিখর সম্মেলন।
আবের এই ভারত সফর রণকৌশলগত দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। কিছুদিন আগে চিনের সঙ্গে ডোকলাম সীমান্ত নিয়ে বিবাদের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন। একইসঙ্গে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আক্রমণাত্মক ভূমিকা ও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে আবের এই সফর ভারত ও জাপানের সম্পর্ক নয়া দিশা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।