নয়াদিল্লি: প্রত্যাশামতোই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে আবেগপ্রবণ রামনাথ কোবিন্দ। বললেন, তিনি কখনও ভাবেননি রাষ্ট্রপতি হবেন, সেই স্বপ্নও দেখেননি। সমাজ, দেশের প্রতি নিরলস সেবাই তাঁকে আজ এখানে নিয়ে এসেছে।


রাষ্ট্রপতি ভোটের ফল বেরনোর পর নিজের আকবর রোডের বাসভবনে তিনি সাংবাদিকদের এও বলেন, লাগাতার দেশ ও জাতির সেবা করে যাওয়া ভারতীয় ঐতিহ্যের মধ্যেই রয়েছে, তাঁর রাষ্ট্রপতি হওয়া ভারতীয় গণতন্ত্রের মহত্বের নজির।

ঘটনাচক্রে আজ রাজধানী বৃষ্টি দেখেছে। আর নয়া রাষ্ট্রপতি তার উল্লেখ করে বলেন, ব্যক্তিগত ভাবে এই মূহূর্তটা আমার কাছে ভীষণ আবেগের। দিল্লিতে আজ খুব বৃষ্টি হচ্ছে। আমার মনে পড়ে যাচ্ছে নিজের পৈত্রিক বাড়ির দিনগুলির কথা। মাটির দেওয়ালের কাচা বাড়ি ছিল আমাদের। খড়ের চাল বৃষ্টির জল ঠেকাতে পারত না। আমরা সব ভাই, বোনেরা দেওয়ালের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকতাম, কখন বৃষ্টি থামবে, সেজন্য।

তারপরই তিনি বলেন, আজও এমন অজস্র রামনাথ কোবিন্দ রয়েছে দেশে, যারা বৃষ্টিতে ভেজে, খেত-খামারে ঘাম ঝরিয়ে চলেছে অন্ন সংস্থানের জন্য। তাদেরই আমি বলতে চাই, পরাউনখ গ্রামের এই রামনাথ কোবিন্দ তাদের একজন হয়েই রাষ্ট্রপতি ভবনে যাচ্ছেন।

রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্বেপল্লী রাধাকৃষ্ণান, এপিজে আবদুল কালাম, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ঠজনেরা যে পদে বসেছেন, সেই পদে নির্বাচিত হয়ে তাঁর কাঁধে যে বিরাট গুরুভার চাপছে, তা মেনে নিয়েছেন কোবিন্দ। সংস্কৃত শ্লোক উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশসেবায় তিনি নিরলস কাজ করে যাবেন। জানিয়ে দেন, সংবিধান রক্ষা, তার মর্যাদা বহাল রাখাই হবে তাঁর কর্তব্য।

কোবিন্দের রাষ্ট্রপতি হওয়ার খবরে খুশির জোয়ারে ভাসছে কানপুর দেহাতের ঝিঙ্ঝাক এলাকা। সেখানেই থাকেন তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা। লখনউয়ের ১৬০ কিমি দূরের সেই তল্লাটে প্রদীপ জ্বালিয়ে, মিষ্টি বিলিয়ে, আবির, ফুল দিয়ে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে খুশিতে মেতে ওঠেন তাঁরা। কোবিন্দের কাছে যাচ্ছেন তাঁরা। রাজধানীগামী ট্রেন ধরবেন ২৩ জুলাই। এখন চলছে তারই প্রস্তুতি।

কোবিন্দের ভাইঝি, পেশায় শিক্ষিকা হেমলতা বলেন, কাকার নাম যেদিন ঘোষিত হয়, সেদিনই জানতাম, উনিই বিপুল ভোটে জিতবেন। কখনও এটা ভাবতেই অবাস্তব লাগে, যে কাকার কোলে ছোটবেলায় ঘুরে বেড়িয়েছি, তিনি রাষ্ট্রপতি হলেন। শুধু আমাদের পরিবারই নয়, গোটা গ্রাম আজ হোলি, দেওয়ালি পালন করছে।