কোটা: দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় জানতেনই না আইআইটি কী। আজ কোটার এটাওয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম ছত্রপুরার বছর ১৮-এর এই ছেলেই যাচ্ছে দিল্লি আইআইটিতে পড়তে। অভিষেক মিনা নামে ওই যুবকের পড়াশোনার পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না। অত্যন্ত দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়ে ওঠা। বাবা দিনমজুর। এনআরইজিএ(ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট)-র শ্রমিক। অভিষেকের গ্রাম থেকে তিনিই প্রথম, যিনি এরকম একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেলেন।


গ্রামেরই এক হিন্দি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা শুরু অভিষেকের। দশম শ্রেণির ফল বেশ ভালোই ছিল। প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭২%। তাঁর স্কুলের শিক্ষকরা তাঁর বাবাকে পরামর্শ দেন, কোটায় নিয়ে গিয়ে আইআইটি-র জন্য কোচিং সেন্টারে ভর্তি করতে। তখনই প্রথম আইআইটি সম্পর্কে জানতে পারেন অভিষেক। তার আগে এ সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না তাঁর। আইআইটি-র পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতে চলতে থাকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি। সেখানেও ভালো ফল। ৮৩% নম্বর পান তিনি। অভিষেক জানিয়েছেন, তাঁর এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে স্কুলের শিক্ষকদের এবং তাঁর বন্ধুদের সাহায্য। শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে এবং বন্ধুদের দেওয়া নোটস তাঁকে ভীষণই সাহায্য করেছে। প্রথমবার আইআইটি পাশ করলেও ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ মেলেনি। এতে বিন্দুমাত্র হতাশ হননি তিনি। আবার পরীক্ষা দেন। এরপর আইআইটি-জেইই পরীক্ষায় খুব ভালো ফল হয় তাঁর। র‌্যাঙ্ক ছিল ২৫৭। আইআইটি দিল্লিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ এসে যায়।

অভিষেক জানিয়েছেন, পড়াশোনার জন্য খুব কষ্ট করতে হয়েছে তাঁকে। কোচিং-এর টাকা জোগাড় করতে ২% সুদে টাকা ধার নেন তাঁর বাবা। অভিষেকের স্বপ্ন, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভের পর অভিনব কিছু বিষয় নিয়ে গবেষণা করা। যা দেশের গ্রামের উন্নয়নে সাহায্য করবে। ছেলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবা রামদয়াল।