নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধীর হাতে কংগ্রেসের নেতৃত্বের ব্যাটন তুলে দিয়ে তিনি সাহস, নিষ্ঠা সহকারে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করলেন সনিয়া গাঁধী। শনিবার কংগ্রেস সদর দপ্তরে দলের সভাপতি পদে আনুষ্ঠানিক অভিষেক হল ৪৭ বছরের রাহুলের। সেখানেই ১৯ বছর কংগ্রেস সভানেত্রী পদে থাকা সনিয়া রাহুলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমি নিশ্চিত, ও সাহস, নিষ্ঠার সঙ্গে দলের নেতৃত্ব দেবে। ব্যক্তিগত আক্রমণ রাহুলকে নির্ভীক করে তুলেছে বলে অভিমত জানিয়ে সনিয়া দাবি করেন, তিনি নিশ্চিত, তরুণ নেতৃত্ব দলে নতুন প্রাণসঞ্চার করবে।
দেশ 'অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের' মুখোমুখি হয়েছে বলে দাবি করেন সনিয়া, তবে তাঁর দলকে ভয় দেখানো যাবে না বলেও অভিমত জানান। বলেন, কংগ্রেসকে অবশ্যই আত্মানুসন্ধান করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, তার মূল্যবোধে স্থিত থাকতে হবে। এটা নীতির যুদ্ধ, আমাদের ঘর গুছিয়ে নিয়ে লড়াইয়ের জন্য, যে কোনও আত্মবলিদানেও প্রস্তুত থাকতে হবে।
ছেলের সহনশীলতা ও দৃঢ়তার জন্য তিনি গর্বিত বলে জানান সনিয়া। বলেন, রাহুল আমার পু্ত্র। এখানে ওর গুণগান করা উচিত নয় আমার। কিন্তু আমি এটা অবশ্যই বলব, ছোটবেলা থেকে ও হিংসার জেরে যন্ত্রণা, বেদনার সহ্য করেছে। নিজের রাজনৈতিক জীবনেও ব্যক্তিগত স্তরে বিষাক্ত আক্রমণ সহ্য করতে হয়েছে ওকে, যা ওকে আরও নির্ভীক করে তুলেছে।
ভাষণে সনিয়া শাশুড়ি ইন্দিরা গাঁধী, স্বামী রাজীব গাঁধীর হত্যাকাণ্ড-পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে নামায় তাঁর অনীহার কথাও বলেন। তবে কংগ্রেস সভানেত্রী থাকাকালে তাঁর প্রতি দলীয় নেতা, কর্মীদের বিপুল সমর্থনের জন্যও তাঁদের ধন্যবাদ জানান সনিয়া।
পাশাপাশি প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিংহ বলেন, রাহুল 'আশাবাদের রাজনীতিকে' পুষ্ট করবেন, যা দেশের এখন প্রয়োজন, 'ভয়ের রাজনীতিকে' দেশকে গ্রাস করতে দেবেন না। কংগ্রেসের ইতিহাসে আজকের দিনটিকে 'অভিনব' আখ্যা দিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন সময় রাহুলজি দলের সভাপতি পদের ভার নিলেন যখন আমাদের রাজনীতিতে কিছু উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। দিনকয়েক আগে একজন বিশিষ্ট পন্ডিত বলেছেন, আতঙ্কের রাজনীতি আশার রাজনীতিকে হারিয়ে জয়ী হবে, এমন আশঙ্কা রয়েছে। রাহুলজী, সেই আশঙ্কার পর্ব কাটিয়ে উঠতে আমরা আপনার ওপর ভরসা করছি।