নয়াদিল্লি: প্রাথমিক আঘাত, বিস্ময়ের পালা শেষ। এবার ঠান্ডা মাথায় হিসেব কষার সময়। উরি সন্ত্রাসে ১৯ জওয়ানের প্রাণহানির পর কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, রাগের মাথায় তড়িঘড়ি কোনও পদক্ষেপ না করে ধীরে সুস্থে পাকিস্তানকে তীব্রভাবে আঘাত করতে চায় তারা। আর এ জন্য সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দুটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর স্থির হয়েছে, কূটনৈতিকভাবে আপাতত পাকিস্তানকে ছত্রভঙ্গ করাই ভারতের লক্ষ্য। আর সে জন্য প্রথমেই তারা বেছে নিয়েছে জেনিভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের সম্মেলন। সেখানে দিল্লি ইসলামাবাদকে বলেছে, সন্ত্রাসবাদ রফতানি করার পথ থেকে সরে আসতে হবে, ফেরত দিতে হবে দীর্ঘদিন ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীর। পাক অধিকৃত বালুচিস্তান, খাইবার-পাখতুনওয়ালা ও সিন্ধুপ্রদেশে যেভাবে নির্মমভাবে বিদ্রোহী জনগণের মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা চলছে তুলে ধরা হয়েছে তাও। একইসঙ্গে নজিরবিহীনভাবে তুলে ধরা হয়েছে পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দু জনতার নিষ্পেষিত হওয়ার প্রসঙ্গ।

জানা গেছে, সোমবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উরির ঘটনা নিয়ে দৃশ্যতই বিপর্যস্ত ছিলেন। সেনা প্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে ওই হামলায় পাকিস্তানের হাত থাকার যাবতীয় প্রমাণ দ্রুত সংগ্রহ করার নির্দেশ দেন তিনি, যাতে তা রাষ্ট্রপুঞ্জের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে তুলে ধরা যায়। মন্ত্রীদের তিনি নির্দেশ দেন, বৈঠকে আলোচনার বিষয় নিয়ে বাইরে মুখ না খুলতে। বিধানসভা ভোটের কারণে প্রতি সপ্তাহে গোয়া সফরের জন্য গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরকে তিরস্কার করেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়ে দেন, সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে।

সোমবার সন্ধেয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে উরি পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে তাঁকে অবহিত করেছেন। এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ, রাষ্ট্রপতি সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনা- তিন বাহিনীরই সর্বাধিনায়ক, কোনও বড় পদক্ষেপের আগে তাঁকে জানাতে হবে।