বেঙ্গালুরু: বর্ষবরণের রাতে বেঙ্গালুরুতে প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীদের অভব্যতা। মহিলাদের শ্লীলতাহানি। ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে দাঁড়িয়ে দেখল পুলিশ। দুষ্কৃতী তাণ্ডবে আতঙ্কে, লজ্জায়, অপমানে অসহায় মহিলাদের পুলিশের কাছে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে হয়। সংবাদমাধ্যমে দুষ্কৃতীদের প্রকাশ্যে বেপরোয়া তাণ্ডবের ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের সাফাই, নববর্ষ ও বড়দিনে এমন ঘটনা তো ঘটেই থাকে। তাঁর দাবি, বর্ষবরণের রাতে উপযুক্ত নিরাপত্তা বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।


বর্ষবরণের রাতে বেঙ্গালুরুর এমজি রোড ও ব্রিগেড রোডে ভিড় জমিয়ে ছিলেন অসংখ্য মানুষ। ভিড়ের মধ্যেই একদল দুষ্কৃতী মহিলাদের উদ্দেশে অশ্লীল মন্তব্য ও শ্লীলতাহানি শুরু করে। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচতে বহু মহিলাকেই জুতো খুলে ছুটে গিয়ে নিকটবর্তী পুলিশ কর্মীর শরণাপন্ন হতে দেখা গিয়েছে। একাধিক ছবি সহকারে এই ঘটনার কথা স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।

ক্যামেরায় এই ঘটনা ধরা পড়ার পরও পুলিশের সক্রিয়তা দেখা যায়নি। উপরন্তু, কুবন পার্ক থানার ইন্সপেক্টর নাগরাজ বলেছেন, এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তিনি বলেছেন, বর্ষবরণের রাতে ওই এলাকায় ১৬০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। ৬০ হাজার মানুষ এসেছিলেন। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল বলেও তিনি দাবি করেছেন।

নাগরাজ অবশ্য কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থানায় এসে অভিযোগ দায়েরের আর্জি জানিয়েছেন।

যদিও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মত্ত গুণ্ডাদের তুলনায় পুলিশের সংখ্যা খুবই কম ছিল। তাদের হাত থেকে মহিলাদের বাঁচাতে পুলিশের তত্পরতা ছিল না। অসংখ্য অভিযোগ সত্ত্বেও কোনও মামলা দায়ের করেনি পুলিশ।

এই ঘটনায় তোপের মুখে পড়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তরুণ প্রজন্মের পশ্চিমী সংস্কৃতির অনুকরণকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, এটা একেবারেই জঘন্য ঘটনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং এর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে।

এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নববর্ষের মতো সময়ে ব্রিগেড রোড, কমার্শিয়াল স্ট্রিট ও এমজি রোডের মোড়ে তরুণরা ভিড় জমান। তরুণ প্রজন্ম একেবারেই পশ্চিমীদের মতো। তারা শুধু মানসিকতাই নয়, পোশাকের দিক থেকেও পাশ্চাত্যকে অনুকরণের চেষ্টা করে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান ললিতা কুমারমঙ্গলম। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফার দাবি করেছেন। কর্নাটকের মহিলা কমিশনও প্রশাসন ও পুলিশের কাছ থেকে ঘটনার পৃথক রিপোর্ট তলব করেছে।

চাপের মুখে পড়ে পরে পুলিশও বলছে, শনিবার রাতের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের খোঁজ করছে।