নয়াদিল্লি: গত জানুয়ারিতে কাশ্মীরের সোপিয়ানে গুলিচালনায় তিন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর তদন্ত স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। সোপিয়ানের গানোভপোরা গ্রামে সেনার কনভয়ে পাথর ছোঁড়া উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে সেনা জওয়ানরা গুলি চালালে মারা যান তিনজন। এ ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলা হয় সেনা অফিসার মেজর আদিত্য কুমারকে। তবে সেনার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, জওয়ানদের প্ররোচিত করা হয়েছিল, যা চরমে চলে যেতেই তাঁরা গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আজ জম্মু ও কাশ্মীরের তরফে সর্বোচ্চ আদালতে জানানো হয়, পুলিশের দায়ের করা প্রথম এফআইআরে মেজর আদিত্যের নাম অভিযুক্ত হিসাবে রাখা হয়নি। এর আগে তাঁকে এফআইআরে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে শোনা গিয়েছিল।
রাজ্য সরকারের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ আদালত জানতে চায়, তবে কি অভিযুক্ত হিসাবে মেজর আদিত্যের নাম করা হবে না। জম্মু ও কাশ্মীর সরকার জানায়, সেটা তদন্তসাপেক্ষ।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ২৪ এপ্রিল এ ব্যাপারে রায় দেবে বলে জানিয়ে রাজ্য সরকারকে ততদিন তদন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, আর যা-ই হোক, ব্যাপারটা একজন সেনা অফিসারকে নিয়ে, কোনও মামুলি অপরাধী নয়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালত জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশকে মেজর আদিত্য কুমার সহ সেনা অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও 'দমনপীড়নমূলক পদক্ষেপ' নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়।
মেজর আদিত্যর বাবা লেফটেন্যান্ট কর্নেল করমবীর সিংহ গত মাসে পিটিশন পেশ করে দাবি জানান, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে জারি হওয়া এফআরটি বাতিল করতে হবে। কেননা এটি 'আইনের চোখে খারাপ'। কার্গিল যুদ্ধের সেনানী ওই সেনা অফিসার দাবি করেন, সোপিয়ানের গুলিচালনার সময় ঘটনাস্থলেই ছিলেন না আদিত্য। তাছাড়া কর্তব্যরত সেনাকর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হলে যে সেনা জওয়ানরা 'ভারতের পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে রাখার জন্য' 'প্রতিকূল পরিবেশে' যাবতীয় বাধার বিরুদ্ধে লড়ছেন, ধাক্কা খাবে তাঁদের মনোবল।
আজকের শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্য পুলিশ কেন্দ্রের সম্মতি ছাড়া মেজর আদিত্য ও অন্য সেনাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাই দায়ের করতে পারে না, জম্মু ও কাশ্মীরে সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ ক্ষমতা আইন বা আফস্পা বহাল থাকায়। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে এই বক্তব্যের পাল্টা দাবি করা হয়, পুলিশের মামলা দায়ের করায় কোনও বিধিনিষেধ নেই।
সোপিয়ানের গুলিচালনায় তিনজনের মৃত্যুতে কাশ্মীরে শোরগোল হয়। মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি জানিয়ে দেন, বিষয়টি যুক্তিসঙ্গত পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।


কিন্তু বিতর্ক মাথাচাড়া দেয় যখন এটা শোনা যায় যে, পুলিশ জেনেরিক এফআইআর দায়ের না করে মেজর আদিত্য ও তাঁর ইউনিটকে অভিযুক্ত করেছে। বিজেপি প্রবল আপত্তি করে। যদিও মেহবুবা দাবি করেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে কথা বলেই এফআইআর রুজু করা হয়েছে।