নয়াদিল্লি:পাকিস্তানের সিন্ধ থেকে ভারতে চলে আসা উদ্বাস্তু হিন্দু পরিবারের এক মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নপূরণে ভরসা দিলেন সুষমা স্বরাজ।

দশকের পর দশক ধরে সীমান্তের কাঁটাতার বাধা হয়ে রয়েছে ভারত, পাকিস্তানের আমজনতার মধ্যে। পাশাপাশি রয়েছে কঠোর অভিবাসন সংক্রান্ত নিয়ম-বিধি। তার ফাঁসেই আটকে পড়েছে ১৭ বছরের মশাল নামে মেয়েটি। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু নিগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে মশালের পরিবার সিন্ধ থেকে ২০১৪-র জুনে জয়পুরে চলে আসে। পাক সংবাদপত্র দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এর খবর, জয়পুরে দ্বাদশ শ্রেণির সিবিএসই পরীক্ষায় ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে মেয়েটি। কিন্তু এখনও ভারতের নাগরিকত্ব না পাওয়ায় সর্বভারতীয় প্রাক-মেডিকেল টেস্টে (এআইপিএমটি) বসার ছাড়পত্র মেলেনি তাঁর। সে বলেছে, আবেদনপত্রে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত দুটি মাত্র অপশন রয়েছে। ভারতীয় ও ভারতের ওভারসিজ নাগরিক (ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া) বা অনাবাসী ভারতীয় (এনআরআই)। কিন্তু দুটোর কোনওটাতেই পড়ি না আমি।'

মশালের বাবা-মা দুজনেই ডাক্তার। তাঁদের পথেই এগতে চায় সে। ২০১৪-র জুনে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসে পাকিস্তান থেকে এ দেশে চলে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিয়ে মূল স্রোতে সামিল করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তাঁরাও ভারতে পাকাপাকি চলে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা বলেছেন, পাকিস্তানে আমাদের আর্থিক সমস্যা ছিল না। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগে থাকতে হচ্ছিল।

মশালের বাবা-মায়ের এমন টাকার জোর নেই যে, প্রায় ১ কোটি টাকা ডোনেশন দিয়ে মেয়েকে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে পড়াবেন। ফলে ডাক্তার হতে গেলে এআইপিএমটি পরীক্ষায় বসা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই মশালের সামনে। তাঁকে তাতে উত্তীর্ণ হতেই হবে। ইতিমধ্যেই একটি বছর নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁর। কোচিংয়ের পিছনেও অর্থব্যয় হয়েছে। এ বছর এআইপিএমটি-তে বসার সুযোগ না পেলে তাকে অন্য কোনও কোর্স পড়তে হবে।




তাঁর বাবা-মা কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত একটা ক্ষীণ আশার আলো মিলেছে। মশালের অসহায়তার কথা জেনে তাঁকে ভেঙে না পড়ার পরামর্শ দিয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ট্যুইট করে নিজে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এদিকে সীমান্ত লোক সংগঠন নামে জয়পুরের একটি এনজিও জানিয়েছে, ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় রাজস্তানে বসবাসকারী পাকিস্তানি হিন্দুরা মৌলিক পরিষেবাগুলি পাচ্ছে না।