হরিবংশ এ ব্যাপারে সাংসদের বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। কারণ, তাঁরা তাঁর সহকর্মী। কিন্তু বিক্ষোভরত সাংসদরা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে চাইলে সাংসদদের বাড়িতে আসুন বা নিজের বাড়িতে ডাকুন।
উল্লেখ্য, রাজ্যসভায় কৃষি বিল নিয়ে গোলমালের জেরে আট সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, আপ, কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দলের সাসপেন্ডেড সাংসদরা গতকাল রাতভর সংসদ ভবন চত্ত্বরে ধর্না দেন।গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় গানও গাইতে দেখা গেল দোলা সেন ও সঞ্জয় সিংহকে। রবিবার রাজ্সভায় যেভাবে গণ্ডগোল হয়, সেই কারণে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু এই সাংসদদের সংসদের বাকি অধিবেশন পর্যন্ত সাসপেন্ড করেছেন। এখন দেখার সাসপেন্ড সাংসদদের ধর্না অব্যাহত থাকবে, নাকি আন্দোলনের অবসানের জন্য কোনও উপায় বেরিয়ে আসবে।
সাসপেন্ড সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও ব্রায়েন ও দোলা দেন, কংগ্রেসের রাজীব সাতভ, সৈয়দ নাসির হুসেন, রিপুন ভোরা, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিংহ, সিপিএমের কে কে রাগেশ এবং ই করিম। এই সাংসদরা রবিবার রাজ্যসভায় কৃষি বিলের তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
সোমবার বেঙ্কাইয়া রাজ্যসভায় হৈহট্টগোলের নিন্দা করে বলেন, এটা ছিল সংসদের উচ্চকক্ষের সবচেয়ে খারাপ দিন। ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশকে হুমকি দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান বলেন, এই ঘটনায় আমি খুবই ব্যথিত। কারণ, সংসদে গতকাল যা হয়েছে, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়। এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।
বেঙ্গাইয়া বলেন, সভায় করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকাও পালন করা হয়। এই নির্দেশিকা এভাবে লঙ্ঘন করলে আম আদমির কাছে কী বার্তা যাবে। কয়েকজন সাংসদ ওয়েলে পর্যন্ত পৌঁছে যান, কাগজ ছোঁড়েন, মাইক ভেঙে দেন এবং রুলবুকও ছুঁড়ে ফেলেন। শুধু তাই নয়, ডেপুটি চেয়ারম্যানকে হুমকিও দেওয়া হয়। সংসদের মান কী এটাই?
বেঙ্গাইয়া বলেন, মার্শালরা না থাকলে ডেপুটি চেয়ারম্যানের সঙ্গে খুবই খারাপ হত পারত। এ সব ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন বলেও মন্তব্য করেন বেঙ্গাইয়া। তিনি ডেপুটি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও খারিজ করে দেন ।
বিতর্কের শুরুটা হয় রবিবার। লোকসভায় পাসের পর রাজ্যসভায় কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন এবং কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি - এই দু’টি কৃষি সংক্রান্ত বিল পেশ করে মোদি সরকার।
বিল পাস হলে কৃষকদের ক্ষতি হবে, এই অভিযোগ তুলে বিলদুটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর আবেদন জানায় বিরোধীরা।
কিন্তু ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ সিংহ সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় শুরু হয় হট্টগোল...
এরপর বিরোধীরা ডিভিশন বা ভোটাভুটির দাবি জানালেও, ডেপুটি চেয়ারম্যান ধ্বনি ভোটে বিল পাস করিয়ে নেন। বিরোধীদের বিক্ষোভের জেরে সাময়িক ভাবে রাজ্যসভা টিভির সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভের সময় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের বিরুদ্ধে রুল বুক ছেঁড়া ও মাইক ভাঙার অভিযোগ ওঠে। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অন্যান্য বিরোধী সাংসদরাও।