চণ্ডীগড়: মঙ্গলবার রাতের ব্রেকিং নিউজ প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি তাদের। টেলিভিশনের পর্দায় যখন বড় বড় হরফে সুষমা স্বরাজের মৃত্যুর খবর সেকেন্ডে সেকেন্ডে ভেসে উঠছে, তখন ওদের মনে চূড়ান্ত উৎকণ্ঠা। সত্যিই কি চিরনিদ্রায় চলে গেলেন ‘এক ফোন দূরে থাকা বিদেশমন্ত্রী’? ইরাকে জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে যাদের জীবন বিপন্ন হয়েছে, সেই সব ভারতীয়দের পরিবারগুলোর কাছে প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ছিলেন ‘মসিহা’। তাঁর মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই সেইসব পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।


ইরাকে আইসিস জঙ্গিদের হাতে খুন হওয়া ২৬ বছরের মনজিন্দর সিংহর পরিবারের সদস্য গুরপিন্দর কউর যেমন বললেন, “তিনি (সুষমা স্বরাজ) কেবল এক ফোন দূরেই ছিলেন। সহজেই তাঁকে পাওয়া যেত।”


ইরাকে আইসিসদের হাতে খুন হওয়া আরও এক ভারতীয়র পরিবারের সদস্য দবিন্দর সুষমা স্বরাজের অকাল প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করে বলেছেন, “সুষমাজি যা করেছেন, তা কোনওদিন ভুলব না। ইরাক থেকে ভারতীয়দের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনতে তিনি অবিরত চেষ্টা করেছেন।” প্রসঙ্গত, ইরাকে কাজ করতে গিয়ে ২০১৪ সাল থেকে নিখোঁজ ছিল ৩৯ জন ভারতীয়। পরে জানা যায়, আইসিসি তাদের অপহরণ করে খুন করে। সুষমা স্বরাজের সক্রিয়তায় সেই ভারতীয়দের দেহ, গতবছর এক বিশেষ বিমানে করে ভারতে নিয়ে আসা হয়। সেইসব মৃতদেহগুলো গণকবর দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। মৃতদের বেশিরভাগই ছিল পঞ্জাবের। অমৃতসর, গুরুদাসপুর, হোশিয়ারপুর, জলন্ধর থেকে যুবকরা ইরাকে কাজ করতে গিয়েছিল। সেখান থেকে আর জীবিত অবস্থায় ফেরা হয়নি তাদের। দেশে এসেছিল তাদের দেহ, কফিনবন্দি হয়ে।


ইরাকে আইসিস হামলায় মৃত ভারতীয়দের মৃতদেহ তাদের পরিবারের হাতে  তুলে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন সুষমা স্বরাজ। আর সেজন্য সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞাও প্রকাশ করেছেন গুরপিন্দর, দবিন্দররা। গুরপিন্দরের কথায়, “হ্যাঁ, এটা ঠিক, তারা জীবিত অবস্থায় ফেরেনি। কিন্তু আমরা তাদের নিয়তি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কী হয়েছে তাদের সঙ্গে, আমরা অবগত হয়েছি। এটা না হলে, হয়ত সারাজীবন ওদের ফেরার অপেক্ষা করতে হত।”