তিরুনেলভেলি: মহাজনের ঋণের ফাঁস থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও উপায় না দেখে আগুনে পুড়ে সপরিবারে আত্মহত্যার চেষ্টা। তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলি জেলার কালেক্টরেটে সোমবার দুই শিশুকন্যাসহ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এক দম্পতি। প্রথমে তাঁরা তাঁদের দুই কন্যাক দেহে আগুন ধরিয়ে দেন।পরে নিজেদের গায়েও আগুন ধরিয়ে দেন। চারজনকেই দ্রুত জেলার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জখমদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জানা গেছে, রক্তচোষা মহাজনের খপ্পরে পড়ে শেষপর্যন্ত এই চরম পদক্ষেপ নেন ওই দম্পতি।

২৮ বছরের পি ইসাকিমুথু পেশায় দিনমজুর। তাঁর ২৫ বছরের স্ত্রী আই শুভলক্ষ্মী গৃহবধূ। তাঁদের দুই কন্যা সন্তানের বয়স যথাক্রমে ৫ ও দেড় বছর। ইসাকিমুথুর ভাই পি গোপী জানিয়েছেন, তাঁর বৌদি টি মুথুলক্ষ্মী নামে স্থানীয় এক মহাজনের কাছ থেকে আট মাস আগে ১.৪৫ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। এরপর সুদ সহ ২.৩৪ লক্ষ টাকা মহাজনকে ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু মহাজনের খাঁই মেটেনি। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে পুরো ধার শোধ হওয়ার জন্য আরও ১.৪৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। তাদের বক্তব্য ছিল, এখনও পর্যন্ত সুদ বাবদ ২.৩৪ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়েছে ইসাকিমুথুর পরিবার। এখনও আসল বাবদ ১.৪৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে।

গোপী বলেছেন, তাঁরা তিরুনেলভেলি জেলা কালেক্টরের কাছে ছয় বার পিটিশন দিয়েছিলেন।কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। কালেক্টর বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপারের কাছে পাঠান। পুলিশ সুপার এরপর সংশ্লিষ্ট ডিএসপি মারফত বিষয়টি আচমপুথুর থানায় পাঠান। এতদিন এভাবেই চলেছে প্রশাসনের কাজ। অন্যদিকে, মহাজনের অত্যাচর দিনের পর দিন বেড়েই চলে।

গোপীর অভিযোগ, স্থানীয় থানার কয়েকজন পুলিশ কর্মী মহাজনের পক্ষেই দাঁড়ান।

যখন দাদা  সপরিবারে আগুনে পুড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে তখন ঘটনাস্থলেই ছিলেন গোপী। তাঁর দাদা ও বৌদি যে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা তিনি জানতেন না বলেই গোপী দাবি করেছেন।

ঘটনাটি ঘটে কালেক্টরেটে। সেখানে অনেক পুলিশ কর্মী ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা  বালি ও জল দিয়ে ইসাকিমুথু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের গায়ের আগুন নেভান। কিন্তু ততক্ষণে তাঁদের শরীর প্রায় পুরোটাই পুড়ে যায়।