থানে: স্কুলে যাওয়ার নামে কেঁদে উঠছিল ছ'বছরের প্রাচী। বাবা বুঝতে না পেরে কাছে ডেকে প্রশ্ন করেন তাকে। শিশুটি জানায়, স্কুলের মাইনে বাকি থাকায় দিদিমণি সকলের সামনে তাকে প্রচণ্ড বকাবকি তো করেছেনই, টান মেরে উপড়ে এনেছেন এক গোছা চুল। আতঙ্কে স্কুল যেতে চাইছে না সে।


মহারাষ্ট্রের থানের জ্ঞানোদয় বিদ্যামন্দিরে এমনই ঘটনা ঘটেছে। ৪,০০০ টাকা মাইনে বাকি পড়ায় খোদ শিক্ষিকা চুল ছিঁড়ে শাস্তি দিয়েছেন দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে। প্রাচীর বাবা অখিলেশ গুপ্ত অভিযোগ করতে যান স্থানীয় বর্তকনগর পুলিশ স্টেশনে। কিন্তু তাঁর অভিযোগ নেয়নি পুলিশ স্টেশন। বরং উপদেশ দেওয়া হয় স্কুলের সঙ্গে কথা বলে মিটমাট করে নিতে। যদিও সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীদের দাবি, এমন কোনও অভিযোগ কেউ জমা দিতে আসেননি।

অখিলেশবাবুর ইন্দিরানগর এলাকায় ছোট একটি স্টুডিও রয়েছে। জমানো টাকা ভেঙে তখনই স্কুলে গিয়ে বাকি পড়া ফি মিটিয়ে দেন তিনি। ঘটনাটি জানান প্রিন্সিপালকে। অভিযুক্ত শিক্ষিকা রেখা নায়ারকে প্রিন্সিপালের ঘরে ঢুকতে দেখে ভয়ে কাঁপতে থাকে প্রাচী। শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হলেও তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অখিলেশবাবুর অভিযোগ।

স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, বিষয়টি তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে এক সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে, লিখিতভাবে নিজের অবস্থান জানাতে বলা হয়েছে। যদি তাতে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হয়, তবে তাঁর চাকরি যেতে পারে।

ওয়াকিবহাল মহল অবশ্য মনে করছে, স্কুল কর্তৃপক্ষও এই ঘটনার দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। শিক্ষকশিক্ষিকাদের পড়ুয়াদের বেতন জমা নিতে চাপ দেয় তারা, যদিও সেটা তাঁদের কাজ নয়। প্রিন্সিপালকেও জেরা করা হোক, জানা হোক, ঠিক কতটা চাপ দিলে, বেতনের দাবিতে একজন দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে তার ক্লাস টিচার এমন নির্মমভাবে মারধর করতে পারেন। ওই শিক্ষিকার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষও ঘটনায় একইরকম দায়ী।