অন্ধ্রপ্রদেশ: লকডাউন কেড়েছে চাকরি। অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসার জন্য চোকাতে হবে লোন! রাস্তায় বসে কলা বিক্রি করছেন স্কুল শিক্ষক!


কিছুদিন আগে অবধিও অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর শহরের একটি নামী কর্পোরেট স্কুলে তেলুগু পড়াতেন ৪৩ বছরের পি ভেঙ্কট সুব্বাইস। বিএস ডিগ্রি থাকার সঙ্গে সঙ্গে জন প্রশাসন ও তেলুগুতে মাস্টার্স ডিগ্রি রয়েছে তাঁর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউন আমূল বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন।

সূত্রের খবর, ভেঙ্কটকে স্কুলের তরফ থেকে বলা হয়, নতুন বছরের অন্তত ৬-৭ জন পড়ুয়াকে স্কুলে ভর্তি হতে রাজি করানোর জন্য। যদি অন্তত ৭ জন পড়ুয়াকে তিনি জোগাড় করে দিতে পারেন তবেই তিনি মাইনে পাবেন ও বাঁচবে চাকরি।

নিরুপায় ভেঙ্কট জানান, লকডাউনের মধ্যে স্কুলে ভর্তি হওয়া দূর অস্ত, কোনও পড়ুয়ার বাড়িতে ঢুকতেও দেওয়া হবে না তাঁকে। অতএব তাঁকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয়।

সুব্বাইসের বাড়িতে অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসার জন্য ৩.৫ লাখ টাকা লোন নেওয়া রয়েছে। নিয়মিত তার ইএমআই চোকাতে হয় তাঁকে। স্কুলে চাকরি করার সময় মাইনে ছিল ১৬ হাজার টাকার কাছাকাছি। বন্ধ হয়েছে সেই রোজগারও। রয়েছে সংসার চালানোর অন্যান্য খরচা। নিজেও অসুস্থ তিনি। বলছেন, ১৫ বছরের শিক্ষকতায় কখনও এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি।

সংসার টানতে বর্তমানে বাধ্য হয়ে রাস্তায় কলা বিক্রি করছেন তেলুগু শিক্ষক। জানান, এটা ছাড়া পরিবারকে সাহায্য করার আর কোনও উপায় ছিল না তাঁর কাছে। এখন দিনে বড়জোর ২০০ টাকা আয় করতে পারছেন তিনি।

প্রিয় শিক্ষকের এই অবস্থার কথা জানতে পেয়ে এগিয়ে আসে তাঁরই কিছু প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী। সবাই মিলে টাকা তুলে সুব্বাইসের হাতে তুলে দেন ৮৭ হাজার টাকা।

ছাত্রছাত্রীদের কাছে কৃতজ্ঞ সুব্বাইস। জানান, পৃথিবী সুস্থ হলেই আবার শিক্ষকতায় ফেরার চেষ্টা করবেন তিনি। কিন্তু তার আগে অবধি রুজিরুটি করতে হবে এই কলা বিক্রিকেই।