নয়াদিল্লি: তেলুগু ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ পেতে গেলে অভিনেত্রীদের শরীর দিতে হয়, তাদের যৌন শোষণ চলে, এমন চাঞ্চল্যকর দাবিতে তেলুগু ফিল্ম চেম্বার অব কমার্সের দপ্তরের বাইরে সম্প্রতি প্রকাশ্যে অর্ধনগ্ন হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন এক তেলুগু অভিনেত্রী। এর জেরে ৮ এপ্রিল তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নিয়ন্ত্রক সংস্থা মুভি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (এমএএ) জানিয়ে দেয়, ওই অভিনেত্রীকে আর সদস্যপদ দেবে না তারা। প্রকাশ্যে অর্ধনগ্ন হয়ে অশালীনতা প্রদর্শনের অভিযোগে তাঁকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪ ধারায় অভিযুক্ত করে পুলিশ। কিন্তু জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) আজ এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পাশাপাশি তেলঙ্গানা সরকারকে নোটিস দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট চাইল।


কমিশন বলেছে, এমএএ ও সরকারি কর্তৃপক্ষ, দু দিক থেকেই একজন দুর্নীতি উন্মোচনকারীর মুখ বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে হয়। রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিব ও কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রকের সচিবকে নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন। অভিনেত্রীর তোলা অভিযোগ মোকাবিলায় বর্তমানে কী মেকানিজম আছে বা কী তাদের প্রস্তাব, তা জানাতে বলা হয়েছে তেলঙ্গানা সরকারকে।
কমিশন বলেছে, তাদের অভিমত, ওই অভিনেত্রীর ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে, তিনি সিনেমায় অভিনয় করতে পারবেন না এবং অন্যরাও তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পারবেন না বলে যে নির্দেশ রয়েছে, সেগুলি তাঁর বেঁচে থাকা ও সম্মানের সঙ্গে জীবনধারণের অধিকারের পরিপন্থী।
কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিনেত্রীর তোলা বিষয়গুলি দাবি করছে, রাজ্য সরকারকে কমিটি গড়ে ব্যবস্থা নিতে হবে, ইন্ড্রাস্ট্রির মহিলা কলাকুশলী, শিল্পী ও কর্মীদের অভাব-অভিযোগের, কর্মক্ষেত্রে অর্থাত তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠলে তার নিষ্পত্তি করতে হবে।
২০১৩-র কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন হেনস্থা রোধ ও অভিযোগ নিষ্পত্তি আইনে কাজের জায়গায় মেয়েদের যৌন হয়রানি ঠেকানোর বেশ কিছু বিধি রয়েছে। ওই আইনে কাজের জায়গা বলতে শুধু সরকারি সংস্থা বা অফিস নয়, বেসরকারি সংস্থাকেও বোঝায়।
কমিশন বলেছে, তাদের নজরে এটা এসেছে যে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪ অনুচ্ছেদে ওই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে নাকি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর তোলা যৌন হেনস্থা ও কাজ দেওয়ার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করার মতো মারাত্মক অভিযোগের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কিছু করেছে কিনা, তার কোনও উল্লেখই নেই কোথাও।