নয়াদিল্লি: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের চাবি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ১৪ জুলাই জগন্নাথের বার্ষিক রথযাত্রার আগে এ ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ওড়িষার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। এ নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন আইনমন্ত্রী প্রতাপ জেনা ও শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের প্রধান পি কে জেনার সঙ্গে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রত্নভান্ডারের চাবি উধাও হয়ে যাওয়ার পিছনের প্রেক্ষাপট, পরিস্থিতি তদন্ত করে দেখবে ওড়িষা হাইকোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের কমিটি, রথযাত্রার পরই রিপোর্ট পেশ করবে।


শ্রী জগন্নাথ মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য রামচন্দ্র দাশ মহাপাত্র বলেন, গত ৪ এপ্রিল কমিটির বৈঠকেই প্রথম বলা হয়, রত্নভান্ডারের ভিতরের কক্ষের চাবির হদিশ মিলছে না। গত সপ্তাহে কমিটির বৈঠকেও ফের প্রসঙ্গটি ওঠে। মন্দির প্রশাসন বা পুরী জেলার ট্রেজারি, কারও কাছেই ওই চাবি নেই।
মন্দির প্রশাসনের একটি সূত্রে বলা হয়েছে, নিয়ম অনুসারে, প্রতিবার রত্নভান্ডার খোলার আগে একটি প্যানেল তৈরি হয়। কাজ হয়ে গেলে রত্নভান্ডারের চাবি পুরীর কালেক্টরের হাতে তুলে দেন প্যানেলের সদস্যরা।

মহাপাত্র বলেন, রত্নভান্ডারের ভিতরের ঘরগুলি শেষ খোলা হয়েছিল ১৯৮৪ সালে। পুরীর কালেক্টর অরবিন্দ অগ্রবাল গত সপ্তাহে কমিটির বৈঠকে বলেন, তারপর সেই চাবি জমা পড়ার ব্যাপারে কোনও খবর নেই। গত ৪ এপ্রিল হাইকোর্টের নির্দেশানুসারে ১৬ সদস্যের একটি দল রত্নভান্ডারের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখার জন্য ভিতরে ঢোকে। তবে তাদের সার্চ লাইট ফেলে লোহার দরজার বাইরে থেকেই ভিতরের কক্ষগুলি পর্যবেক্ষণ করতে হয়।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিরঞ্জন পট্টনায়ক, বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি সমীর মহান্তিও এ ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছেন। পট্টনায়কের বক্তব্য, রাজ্যবাসীর নজর ঘোরাতেই বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের নির্দেশ। গত ১৮ বছরে মুখ্যমন্ত্রী অনেক বিচারবিভাগীয় কমিশন করেছেন। কী ফল হয়েছে? বিজেপি নেতার প্রশ্ন, দু মাস আগে চাবি খোয়া গেলেও কেন রাজ্যের কর্তারা চুপ করে বসেছিলেন? বিচারবিভাগীয় তদন্ত স্রেফ লোকদেখানো। ৪ এপ্রিলের আগেই সব জানত ওরা। বিচারবিভাগীয় তদন্ত নয়, ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত।
পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতীও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে বলেন, রাজ্য প্রশাসন, মন্দির কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।