আগরতলা: জাতীয় রাজনীতিতে বামেরা কি এখনও প্রাসঙ্গিক? তারই জবাব দেবে ত্রিপুরা ভোটের ফল। ১৯৯৩ থেকে ২৫ বছর ধরে এখানে ক্ষমতায় সিপিএম সরকার। ২০ বছর ধরে মানিক সরকার রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর আসনে। কিন্তু এবারের ভোট মানিকবাবুর কাছে অগ্নিপরীক্ষা। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া তো রয়েছেই, তারপর উত্তর পূর্বাঞ্চলের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য দখল করতে এবার উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি। শেষ কয়েকটি ভোটে পরিষ্কার, রাজ্যে পদ্মের পক্ষে হাওয়া বইছে ভালমত।


শুধু সিপিএম নয়, আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে ত্রিপুরার ফল বিজেপির কাছেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ রাজ্যে বিজেপি জিতলে নরেন্দ্র মোদী হাওয়ায় ফের সিলমোহর পড়বে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখানে ৭টি জনসভা করেছেন, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ৯টি।

দলীয় নেতা রাম মাধব ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন, ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখল করবেন তাঁরা। লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের পক্ষেও গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপুরার ফল।

ত্রিপুরায় মানিক সরকারের জনপ্রিয়তা সংশয়াতীত। ২০ বছর ধরে তিনি মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন, তাঁর সততা নিয়েও কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু এবারের ভোটে রীতিমত কঠিন পরীক্ষার সামনে তিনি। ২০১৩-য় ত্রিপুরায় খাতাই না খোলা বিজেপি এবার কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামনে ফেলেছে সিপিএম জোটকে। পশ্চিমবঙ্গ হাতছাড়া হওয়ার পর এই ত্রিপুরাতেই দীর্ঘদিন ধরে টিকে রয়েছে তারা। এ রাজ্য হারালে হাইকমান্ডের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

পাশাপাশি মেঘালয়ে লড়াই চলছে মূলত বিজেপি-এনপিপি ও কংগ্রেসের মধ্যে। ত্রিপুরার মতই এ রাজ্যেও ২০১৩-য় গত বিধানসভা ভোটে একটিও আসন পায়নি বিজেপি। ৬০টির মধ্যে কংগ্রেস পায় ২৯টি আসন, এনপিপি জয় পায় দুটিতে, ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জেতে ৮টি আসন।

এ রাজ্যে ৪০ বছর ধরে কংগ্রেস সবথেকে বড় দল। কিন্তু এবার তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া বইছে রীতিমত। হেরে গেলে দিল্লি থেকে শুরু করে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি পর্যন্ত শুধু মিজোরাম রয়ে যাবে তাদের হাতে।

আসা যাক নাগাল্যান্ডের কথায়। দীর্ঘ সময় ধরে এ রাজ্যে একচ্ছত্রভাবে রাজত্ব করেছে আঞ্চলিক দলগুলি। কংগ্রেসের এখানে বিশেষ প্রভাব নেই। এখানে বিজেপি জিতলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের আরও একটি রাজ্য হাতে আসবে তাদের। এনডিপিপি-র সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্ত সঠিক বলে প্রমাণিত হবে, আবার হেরে গেলে প্রশ্ন উঠবে এনপিএফের সঙ্গে জোট ছাড়া নিয়ে।