নয়াদিল্লি: বদলাচ্ছে সময়। একটা যুগে ল্যান্ডলাইন ফোন যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল। এখন ল্যান্ডলাইনের জায়গা নিয়ে নিয়েছে মোবাইল ফোন। আর সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাচ্ছে ভারতীয় রেলের ভাবনাও।


আগে, যাত্রীদের সহায়তায় প্রত্যেক রেল স্টেশনে পাবলিক টেলিফোন বুথ রাখাটা ন্যূনতম প্রয়োজনীয় তালিকার অন্তর্ভুক্ত ছিল। গত শতাব্দী থেকেই রেল স্টেশনে পাবলিক বুথ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে এগিয়ে গিয়েছে প্রযুক্তি। তার সঙ্গে তাল মেলাতে সেই তালিকা থেকে পাবলিক বুথকে বাদ দিয়েছে রেল।


রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, ক্রমাগত না ব্যবহার হওয়ার দরুন পাবলিক টেলিফোন বুথগুলি প্রায় ভগ্নদশা হয়ে পড়েছে। কারণ, বর্তমান যুগে সকলের হাতেই মোবাইল চলে এসেছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রেলের সিদ্ধান্তে সেই জায়গায় মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট বসানো হয়েছে।


গত এপ্রিল মাসে দেশের সকল রেল জোনকে নতুন যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য পরিষেবা সংক্রান্ত তালিকা পাঠিয়েছে মন্ত্রক। সেখানে বলা হয়েছে, পাবলিক বুথ সরিয়ে সেখানে ইউনিভার্সাল চার্জিং পয়েন্ট বসাতে হবে। পাশাপাশি, প্রতি স্টেশনে নার্সিং কক্ষ এবং মশা-মাছি ধরার মেশিন বসানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।


রেলের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, প্রাক-মোবাইল যুগে টেলিফোন বুথগুলির গুরুত্ব অপরিসীম ছিল। যাত্রীরা, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন। যাওয়া বা আসার খবর দিতে পারতেন। এটা জরুরি পরিষেবার আওতাধীন ছিল। কিন্তু, এখন মোবাইল ফোন চলে আসায় এই বুথগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।


রেল সূত্রে খবর, এখনও সারা দেশে বিভিন্ন স্টেশনে ২০ হাজার ফোন বুথ রয়ে গিয়েছে। ২০০৪ সালে ফোন-বুথ সংক্রান্ত রেলের নীতিতে বলা হয়েছিল, ‘এ’-শ্রেণির স্টেশনগুলির প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মে দুটি করে বুথ থাকবে। ‘বি’ ও ‘সি’ শ্রেণির স্টেশনে প্রতি প্ল্যাটফর্মে একটি করে, ‘ডি’ শ্রেণিতে স্টেশনে দুটি করে এবং ‘ই’ ও ‘এফ’-এর ক্ষেত্রে স্টেশনে একটি করে পাবলিক টেলিফোন বুথ থাকবে।


কিন্তু, গত দেড় দশকে প্রযুক্তির প্রভুত উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে দেশে ১১৮.৩৪ কোটি মোবাইল কানেকশন রয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও এখন অধিকাংশের আয়ত্তের মধ্যে। যার দরুন, শুধু রেল নয়, বহু জায়গায় টেলিখোন বুথ অচল হয়ে পড়ছে। ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সংসদে জানিয়েছিলেন, দেশে মাত্র ৫.৭৭ লক্ষ টেলিফোন বুথ রয়েছে।