নয়াদিল্লি: নির্ভয়াকাণ্ডের দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করার জন্য আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিল তিহার কর্তৃপক্ষ। যেহেতু দোষীদের আইনি প্রক্রিয়ার সময়সীমা এখনও শেষ হয়নি, তাই সেই আবেদন খারিজ করে দিল আদালত। ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি আদালত দোষীদের শেষ সুযোগ দিয়েছেন তাদের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য। সেই সময়সীমা আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে। আদালত এও জানায়, অনুমানের সাপেক্ষে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা যায় না।
ঘটনাটা ছিল ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের। কনকনে শীতের রাতে রাজধানীর রাজপথে ধর্ষিত হয়েছিলেন ২২ বছরের ফিজিওথেরাপি ইন্টার্ন জ্যোতি (নাম পরিবর্তিত)। শুধু ধর্ষণই নয়, বর্বরতা এমনই ছিল যে চিকিৎসা বিজ্ঞানও তাঁর জীবন বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছে। নারকীয় এই ঘটনায় মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত, রাম সিংহ সহ এক নাবালক, সকলকেই দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। নাবালক হওয়ার কারণে ছাড়া পেয়ে যায় এক দোষী। তিহারে আত্মহত্যা করে অন্য আরেক দোষী রাম সিংহ। বাকি চার জনের মৃত্যুর দাবিতেই আইনি লড়াই লড়ছেন নির্ভয়ার মা।
আদালত মুকেশ, বিনয়, অক্ষয় ও পবনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে। ঠিক হয় ২২ জানুয়ারি চার দোষীর ফাঁসির সাজা কার্যকর করা হবে। পরে তা আইনি কারণেই পিছিয়ে যায়। এরপর আদালত ১ ফেব্রুয়ারি ফাঁসি কার্যকর করার কথা ঘোষণা করে। তিহার জেল কর্তৃপক্ষ সমস্ত প্রস্তুতি নিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়। কারণ দোষীরা এক এক করে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাতে শুরু করে। যদিও রাষ্ট্রপতি মুকেশ, অক্ষয় ও বিনয়ের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেয়। এদের মধ্যে কেবল পবনই এখনও পর্যন্ত প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায়নি। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট তার আর্জি খারিজ করার পর আর কোথাও কোনও আবেদন করেনি পবন।
অন্যদিক আদালত দোষীদের এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে তাদের সমস্ত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। সেই সময়ও শেষের পথে। পবন বাদ দিয়ে সবাই তাদের প্রাণ বাঁচানোর সমস্ত চেষ্টা করে ফেললেও পবনের তরফে কোনও আবেদন এখনও পর্যন্ত কোনও আদালতে জমা পড়েনি। দোষী পবন এমন অবস্থায় আর কোথাও কোনও আবেদন করবেন না, এই ‘অনুমান’ থেকেই আদালতের কাছে ফাঁসি কার্যকর করার নতুন দিন ঘোষণার আর্জি জানায় তিহার কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সেই আর্জি খারিজ করে দেয় দিল্লি আদালত। শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, যেখানে আইন অপরাধীদের বাঁচার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে এমন আবেদন শুধু অপরাধই নয় পাপও।