চেন্নাই: আস্থাভোটে জিতেই প্রথমেই কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই কে পালানিস্বামী। রাজ্যের প্রায় পাঁচশোর বেশি মদের দোকান বন্ধের নির্দেশ দিলেন তিনি।


২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। গত বছর নিজের জীবদ্দশায় জয়ললিতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, পর্যায়েক্রমে রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করা হবে।


তাঁর মৃত্যুর পর সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে উদ্যোগ নিলেন উত্তরসূরী পালানিস্বামী। এর আগে জয়ললিতার আমলে ৫০০ দেশে তৈরি বিলিতি মদের (আইএমএফএল) দোকান বন্ধ হয়েছিল। এদিনের নির্দেশের ফলে, সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল প্রায় এক হাজার। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর করা প্রতিশ্রুতিকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত।


প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুতে আইএমএফএল-এর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রাজ্যের হাতেই। রাজ্যে প্রায় ৬৩০০-র মত মদের দোকান রয়েছে। যার থেকে প্রশাসনের কোষাগারে আসে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা। এখন মদের দোকান বন্ধের ফলে, সেই আয়ের উৎসে ভাটা পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।


শুধু মদের দোকান বন্ধই নয়, এদিন একাধিক সিদ্ধান্ত নেয় নতুন মন্ত্রিসভা। মহিলা, কর্মহীন এবং মৎস্যজীবী সহ পাঁচটি কল্যাণমূলক বিলে স্বাক্ষর করেন পালানিস্বামী।


মহিলাদের জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে এআইএডিএমকে প্রশাসন। যেমন মাতৃত্বকালীন ভাতা ১৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৮ হাজার করা হয়েছে। মহিলাদের দুচাকার যান কেনায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকির ঘোষণাও করা হয়েছে।


পাশাপাশি, মৎস্যজীবীদের জন্য বিনামূল্যে গৃহনির্মাণ এবং কর্মহীন যুবকদের জন্য ভাতা বৃদ্ধিরও ঘোষণা করেছে পালানিস্বামী প্রশাসন। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ কর্মহীনরা এবার থেকে প্রতিমাসে ৩০০ টাকা ভাতা পাবেন। একইভাবে, দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ এবং স্নাতকরা যথাক্রমে ৪০০ ও ৬০০ টাকা করে ভাতা পাবেন।


মহিলাদের টু-হুইলার প্রকল্পের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ৮৫ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে মৎস্যজীবী আবাসনের জন্য। পালানিস্বামী মনে করিয়ে দেন, এসবই করা হচ্ছে জয়ললিতার করা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী।


প্রসঙ্গত, জয়ললিতাও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্প করেছিলেন। যেমন— ‘আম্মা ক্যান্টিন’, ‘আম্মা ল্যাপটপ প্রকল্প’, ‘আম্মা জল’, ‘আম্মা লবন’, ‘আম্মা সিমেন্ট’ ও ‘আম্মা মিক্সার-গ্রাইন্ডার’, ‘আম্মা টেবিল ফ্যান’ ইত্যাদি।